কলকাতা, 24 জুন : ইউনাইটেড গার্ডিয়ানস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আজ আবারও কলেজ স্কয়্যারের গেটের বাইরে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখানো হয় । তাঁদের দাবি নিয়ে আলোচনায় বসার আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চিঠিও পাঠানো হয় । 85টি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের যৌথ মঞ্চ এই অ্যাসোসিয়েশন । তাঁদের তরফে এর আগেও বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল।
জুন মাসের প্রথম দিন থেকে রাস্তায় নেমে ফি মকুবের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকরা । টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য ফি দিতে নারাজ তাঁরা । তাঁদের প্রত্যেকের সন্তান শহরের কোনও বেসরকারি স্কুলে পাঠরত । প্রতিদিনই এক বা একাধিক স্কুলের সামনে গিয়ে দাবি নিয়ে সরব হচ্ছেন তাঁরা ।
আজ দুপুর দেড়টা থেকে কলেজ স্ক্যয়ারের সামনে জমায়েত করেন বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকরা । গেটের বাইরে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা ।
নিজেদের দাবি নিয়ে ইউনাইটেড গার্ডিয়ানস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, "মার্চ মাস থেকে দীর্ঘদিনের লকডাউন । এই লকডাউনে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত । এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে সংগত কারণেই অভিভাবকদের তরফে এই দাবিটা উঠে আসে যে, এই লকডাউন পর্বে তিনমাস স্কুল বন্ধ । এখনও স্কুল খোলেনি । কবে খুলবে তা কারও জানা নেই । তাই আমরা লকডাউন পর্বে আমরা শুধুমাত্র টিউশন ফি দিতে চাই । এবং যে সমস্ত স্কুলে সমস্ত ফি-টা টিউশন ফি-র হেডে নেওয়া হয় সেই সমস্ত স্কুলে টিউশন ফি-র 50 শতাংশ মকুব করতে হবে ।"
সুপ্রিয়বাবু আরও বলেন, "বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হচ্ছে, যদি শুধুমাত্র টিউশন ফি তাঁরা নেন, তাহলে না কি শিক্ষক, অশিক্ষক, কর্মচারীদের তাঁরা বেতন দিতে পারবেন না । মুখ্যমন্ত্রী আমাদের থেকে ভালো জানেন যে, এই কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা । ইতিমধ্যেই বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলেছেন তাঁরা পূর্ণ বেতন তো দূরে থাক, তাঁদের প্রাপ্য বেতনটুকুও পাচ্ছেন না । আজ এমন কোনও স্কুল নেই যারা ফি-তে ছাড় দিচ্ছে । আমাদের দাবিটা ন্যায্য । ইলেকট্রিক ফি, ল্যাব ফি, রি-অ্যাডমিশন ফি, লাইব্রেরি ফি, এগুলোর কী প্রয়োজন এখন ? নানান বাহারি নামে কোটি কোটি টাকা অভিভাবকদের পকেট কেটে আয় করছে স্কুলগুলি ।"
এই দাবিতেই জুন মাসের প্রথম থেকে স্কুলে স্কুলে অভিভাবকরা আন্দোলন-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন । ইউনাইটেড গার্ডিয়ানস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি শতাধিক অভিভাবকের সাক্ষর সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনলাইন ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল । তাঁদের আবেদন, মুখ্যমন্ত্রী ফি-এর বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। আজ সেই আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি পাঠানো হয়েছে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ।
এই বিষয়ে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়েছি । আমরা তাঁকে ই-মেল মারফত এই চিঠি পাঠিয়েছি । আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আবেদন জানাচ্ছি । যদি আমাদের দাবি আদায় না হয় তাহলে আমাদের কাছে আরও ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া আর কোনও পথ নেই ।"