ETV Bharat / state

জলসংকট এখনও দূরে, কিন্তু রাজ্যকে সতর্ক হতে হবে এখনই - water crisis

পশ্চিমবঙ্গবাসীদের জন্য সুখবর । বিভিন্ন গবেষকের মতে দিল্লি, হায়দরাবাদ, চেন্নাই বা বেঙ্গালুরুতে জলাভাব প্রকট হলেও সে অবস্থায় পৌঁছতে পশ্চিমবঙ্গের এখনও কিছুটা দেরি । তবে সতর্ক হতে হবে এখনই ।

জলসংকট এখনও দূরে
author img

By

Published : Jun 22, 2019, 10:13 PM IST

Updated : Jun 27, 2019, 7:46 AM IST

কলকাতা, 22 জুন : পশ্চিমবঙ্গের ভূগর্ভস্থ জলের যে অবস্থা তা সবার কপালেই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে । শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, নীতি আয়োগে প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট বলছে, 2020 সালের মধ্যেই ভারতের বহু শহরে ভূগর্ভস্থ জলের সংকট দেখা দেবে এবং 2030 সালের মধ্যে বহু শহরে পানীয় জলের অভাব শুরু হবে ।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

হাইড্রোজিওলজিস্ট সুজিত চৌধুরি বলেন, "গোটা চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যত পরিমাণ ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করে, তার দ্বিগুণ জল ভারতবর্ষ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে ।" তিনি আরও জানান, শুধু একটি ঘটনাকে এর জন্য দায়ি করলে চলবে না, অনেক কারণ আছে ভূগর্ভস্থ জলের অভাব দেখা দেওয়ার জন্য । তবে পশ্চিমবঙ্গবাসীর জন্য সুখবর । বিভিন্ন গবেষকের মতে দিল্লি, হায়দরাবাদ, চেন্নাই বা বেঙ্গালুরুতে জলের অভাব প্রকটভাবে দেখা দিলেও সে অবস্থায় পৌঁছাতে পশ্চিমবঙ্গের এখনও অনেকটা দেরি । এখানে একটা ইন্টারেস্টিং বিষয় হল, ভারতের অন্যান্য শহরের তুলনায় কলকাতা অনেকটাই নতুন । অর্থাৎ প্রাকৃতিক নিয়মে পলিমাটির স্তর পড়ে সব শেষে গড়ে উঠেছে এই অঞ্চলটি । পাশাপাশি এখানে যেহেতু পলিমাটির স্তরটি বেশ মোটা তাই জলের অভাব এখনও তেমনভাবে নেই । তবে পলিমাটি থাকলেই যে তা জল ধারণ করতে পারবে তেমনটা নয় কারণ সবরকমের পলিমাটি বা বেলেমাটির জল ধারণ ক্ষমতা থাকে না ।

ভিডিয়োয় দেখুন

বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে ভূগর্ভস্থ স্বচ্ছ জলের পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে । অতিরিক্ত জলের ব্যবহারের ফলে ভূগর্ভস্থ জল যেমন কমছে, তেমনি সেই জলে মিশছে আর্সেনিক, ইউরেনিয়াম ও ক্লোরাইড ।

পশ্চিমবঙ্গে আর্সেনিকের বিষক্রিয়া একটি বড় সমস্যা । সমস্যা সবচেয়ে বেশি পশ্চিমবঙ্গের 24 পরগনা এলাকায় । যেসব এলাকায় প্রচুর পরিমাণে অগভীর নলকূপ রয়েছে সেসব এলাকায় জলে আর্সেনিকের পরিমাণ বেশি । যেসব জায়গায় ভূগর্ভে 300 ফুট পর্যন্ত আর্সেনিকের প্রভাব পাওয়া গেছে সেখানে মোটা মাটির স্তর নেই । ফলে মাটির উপরে থাকা আর্সেনিক জলে মিশে যায় । পাশাপাশি শহরের বহু এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলে কোথাও সল্ট ও আয়রনের আধিক্যও রয়েছে ।

সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের সদস্য ডঃ এস পি সিনহা রায় বলেন, " ভূগর্ভস্থ জল তুলে ব্যবহার করা বেশ সহজ । একারণে শহরের বেশিরভাগ বাড়িতে প্রচুর পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা হচ্ছে । ফলে ভূগর্ভস্থ জলে টান পড়ছে । কমে আসছে সেই জলের পরিমাণ । " পরিসংখ্যান বলছে 1988 সালে কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায় যেমন পার্ক স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস ও EM বাইপাসের সংলগ্ন এলাকায় যে ভূগর্ভস্থ জলস্তর ছিল, তা এখন 8-10 মিটার নেমে গেছে । এই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভূগর্ভস্থ জলের পরিপূরক হিসাবে গঙ্গার জল ব্যবহার করা হবে ।

দক্ষিণবঙ্গে "নদী বাঁচাও" বা রিভার রিজুভিনেশনের প্রকল্প চালু হয়েছে । প্রকল্পটির নাম "ঊষর মুক্তি" প্রোগ্রাম । তবে দক্ষিণবঙ্গে জল সংরক্ষণে তেমনভাবে সচেতনতা শুরু হয়নি । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাটির তলা থেকে যত বেশি পরিমাণে জল তুলে নেওয়া হবে, মাটির উপরের স্তরের স্থিতাবস্থা তত দ্রুত নষ্ট হতে থাকবে । এমনটা যদি চলতে থাকে তাহলে মাটি এবং তার ওপরে নির্মিত ঘরবাড়ি সবকিছুই ধসে পড়বে একদিন । তাই সময় থাকতেই সচেতন হতে হবে আমাদের ।

কলকাতা, 22 জুন : পশ্চিমবঙ্গের ভূগর্ভস্থ জলের যে অবস্থা তা সবার কপালেই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে । শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, নীতি আয়োগে প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট বলছে, 2020 সালের মধ্যেই ভারতের বহু শহরে ভূগর্ভস্থ জলের সংকট দেখা দেবে এবং 2030 সালের মধ্যে বহু শহরে পানীয় জলের অভাব শুরু হবে ।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

হাইড্রোজিওলজিস্ট সুজিত চৌধুরি বলেন, "গোটা চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যত পরিমাণ ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করে, তার দ্বিগুণ জল ভারতবর্ষ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে ।" তিনি আরও জানান, শুধু একটি ঘটনাকে এর জন্য দায়ি করলে চলবে না, অনেক কারণ আছে ভূগর্ভস্থ জলের অভাব দেখা দেওয়ার জন্য । তবে পশ্চিমবঙ্গবাসীর জন্য সুখবর । বিভিন্ন গবেষকের মতে দিল্লি, হায়দরাবাদ, চেন্নাই বা বেঙ্গালুরুতে জলের অভাব প্রকটভাবে দেখা দিলেও সে অবস্থায় পৌঁছাতে পশ্চিমবঙ্গের এখনও অনেকটা দেরি । এখানে একটা ইন্টারেস্টিং বিষয় হল, ভারতের অন্যান্য শহরের তুলনায় কলকাতা অনেকটাই নতুন । অর্থাৎ প্রাকৃতিক নিয়মে পলিমাটির স্তর পড়ে সব শেষে গড়ে উঠেছে এই অঞ্চলটি । পাশাপাশি এখানে যেহেতু পলিমাটির স্তরটি বেশ মোটা তাই জলের অভাব এখনও তেমনভাবে নেই । তবে পলিমাটি থাকলেই যে তা জল ধারণ করতে পারবে তেমনটা নয় কারণ সবরকমের পলিমাটি বা বেলেমাটির জল ধারণ ক্ষমতা থাকে না ।

ভিডিয়োয় দেখুন

বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, সারা বিশ্বে ভূগর্ভস্থ স্বচ্ছ জলের পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে । অতিরিক্ত জলের ব্যবহারের ফলে ভূগর্ভস্থ জল যেমন কমছে, তেমনি সেই জলে মিশছে আর্সেনিক, ইউরেনিয়াম ও ক্লোরাইড ।

পশ্চিমবঙ্গে আর্সেনিকের বিষক্রিয়া একটি বড় সমস্যা । সমস্যা সবচেয়ে বেশি পশ্চিমবঙ্গের 24 পরগনা এলাকায় । যেসব এলাকায় প্রচুর পরিমাণে অগভীর নলকূপ রয়েছে সেসব এলাকায় জলে আর্সেনিকের পরিমাণ বেশি । যেসব জায়গায় ভূগর্ভে 300 ফুট পর্যন্ত আর্সেনিকের প্রভাব পাওয়া গেছে সেখানে মোটা মাটির স্তর নেই । ফলে মাটির উপরে থাকা আর্সেনিক জলে মিশে যায় । পাশাপাশি শহরের বহু এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলে কোথাও সল্ট ও আয়রনের আধিক্যও রয়েছে ।

সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের সদস্য ডঃ এস পি সিনহা রায় বলেন, " ভূগর্ভস্থ জল তুলে ব্যবহার করা বেশ সহজ । একারণে শহরের বেশিরভাগ বাড়িতে প্রচুর পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা হচ্ছে । ফলে ভূগর্ভস্থ জলে টান পড়ছে । কমে আসছে সেই জলের পরিমাণ । " পরিসংখ্যান বলছে 1988 সালে কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায় যেমন পার্ক স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস ও EM বাইপাসের সংলগ্ন এলাকায় যে ভূগর্ভস্থ জলস্তর ছিল, তা এখন 8-10 মিটার নেমে গেছে । এই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভূগর্ভস্থ জলের পরিপূরক হিসাবে গঙ্গার জল ব্যবহার করা হবে ।

দক্ষিণবঙ্গে "নদী বাঁচাও" বা রিভার রিজুভিনেশনের প্রকল্প চালু হয়েছে । প্রকল্পটির নাম "ঊষর মুক্তি" প্রোগ্রাম । তবে দক্ষিণবঙ্গে জল সংরক্ষণে তেমনভাবে সচেতনতা শুরু হয়নি । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাটির তলা থেকে যত বেশি পরিমাণে জল তুলে নেওয়া হবে, মাটির উপরের স্তরের স্থিতাবস্থা তত দ্রুত নষ্ট হতে থাকবে । এমনটা যদি চলতে থাকে তাহলে মাটি এবং তার ওপরে নির্মিত ঘরবাড়ি সবকিছুই ধসে পড়বে একদিন । তাই সময় থাকতেই সচেতন হতে হবে আমাদের ।

Intro:wb_kol_ground water condition_bite1_papri


Body:wb_kol_ground water condition_bite1_papri


Conclusion:wb_kol_ground water condition_bite1_papri
Last Updated : Jun 27, 2019, 7:46 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.