কলকাতা, 28 অগস্ট: দু'জনেই পর্যটন দফতরের সঙ্গে যুক্ত। দু'জনেই শিল্পী, জনপ্রিয় গায়ক। রাজ্যের মন্ত্রীও বটে। কিন্তু সোমবার বিধানসভায় শেষ বেলায় দুই শিল্পীর পর্যটন দফতরের কাজ নিয়ে মনোমালিন্যের ছবি ধরা পড়ল। সবটাই ঘটল বিধানসভার অলিন্দে।
এদিন দুপুর নাগাদ বিধানসভার অধিবেশন শেষ হয়ে যায়। তিনটে থেকে ছিল বনমহোৎসব। সাড়ে তিনটে নাগাদ ছিল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। তবে যখন দুই মন্ত্রীর মধ্যে বাদানুবাদের ঘটনা ঘটেছে তখন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হয়ে গিয়েছে। এই সময়ই পাশাপাশি হাঁটতে দেখা যায় দুই মন্ত্রীকে। যখন তাঁরা এভাবে হাঁটছেন তাঁদের মধ্যে চলছিল বাদানুবাদ। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের হঠাৎ নজরে আসে বিষয়টি। শোনা যায় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ইন্দ্রনীল সেনের উদ্দেশে বলছেন, "তুমি আমার দফতরের কাজ আটকাচ্ছ কেন ? হঠাৎ করে ফাইল পাঠানো বন্ধ করে দিলে কী করে চলবে ? এভাবে সরকারি কাজ আটকে যাচ্ছে।" যার জবাবে মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলেন, "তোর যা বক্তব্য আছে, মুখ্যমন্ত্রীকে গিয়ে বল।" আদতে কথা বাড়াতে চাননি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।
যদিও এরপরই মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, "সেটা তো আমি বলেছি। প্রয়োজন হলে আবারও বলব। কিন্তু তুমি আমার কাজ এভাবে আটকাতে পার না।" এবার কিছুটা বিরক্তই হন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। পাছে অন্যের কানে যায়, তিনি বাবুলকে নিরস্ত্র করতে বলেন, "এখানে এইভাবে কথা বলিস না তুই। তোর দফতরের কাজ কেন আটকাতে যাব আমি ? বললাম তো, তোর কিছু বলার থাকলে দিদিকে গিয়ে বল।"
আরও পড়ুন: দত্তপুকুর বিস্ফোরণে সাসপেন্ড দুই পুলিশ আধিকারিক, মন্ত্রিসভার বৈঠকেই নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
বিষয়টা এরপর আর বেশি দূর এগোয়নি বলেই জানা গিয়েছে। গোটা চত্বরে ইতস্তত ভাবে ছিলেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। কিন্তু প্রশ্ন হল, পর্যটন দফতরের দুই বড় দায়িত্বে রয়েছেন এই দুই মন্ত্রী। তাহলে তাদের মধ্যে এ হেন পরিস্থিতি তৈরি হল কেন ? তৃণমূলে যোগদানের পর বালিগঞ্জে জয় এবং বাবুল সুপ্রিয়কে পর্যটন মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। অতীতে এই দফতর ইন্দ্রনীল সেনের হাতে থাকলেও অতীতের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান করা হয়েছে তাঁকে। এই অবস্থায় বাবুল সুপ্রিয়র সরাসরি ইন্দ্রনীল সেনের বিরুদ্ধে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রসঙ্গত, এই ঘটনা নজরে আসার পর দুই মন্ত্রীকেই ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউই ফোন ধরেননি। ফলে এক্ষেত্রে তাঁদের বক্তব্যও মেলেনি।