মেদিনীপুর, 21 জানুয়ারি: আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনে দোষী সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার ৷ এই নিয়ে মেদিনীপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন, আইনি লড়াইয়ে আরজি করে নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন ৷
তিনি এদিন বলেন, "এসব ড্রামাবাজি করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বাসন্তীতে 12 দিন ধরে নিখোঁজ থাকা নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়েছে ৷ তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগে এই রাজ্যে শিশুকন্যা, বোন, দিদি, মায়েদের রক্ষা করার ব্যবস্থা করুক ৷ ওসব ড্রামাবাজি করে কিছু হবে না ৷ আমি আজ অভয়ার বাড়ি যাব ৷ তাঁর বাবা-মার সঙ্গে দেখা করে আইনি লড়াইয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেব ৷ আমরা তাঁদের কাঁধে কাঁধ দিয়ে আইনি লড়াই করব ৷"
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলার মেদিনীপুর শহরের রিংরোড এলাকায় সচেতন নাগরিক সমাজের ডাকে মিছিলে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী । স্যালাইন-কাণ্ডে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবের গ্রেফতারের দাবি তোলেন তিনি ৷ সেইসঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেনশন ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার-সহ প্রসূতিদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে হয় এই মিছিল ৷ এই মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগের । পাশাপাশি দাবি ওঠে, জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেনশন এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে ৷ মৃত প্রসূতির পরিবারকে 50 লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের দাবি জানানো হয় ।
তবে মিছিল শুরুর আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "এই ডাক্তাররা হল জাতীয় সম্পদ ৷ তাঁদের সাসপেন্ড করা অপরাধ । তাই তাঁদের সাসপেনশনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছি ৷ বিষ স্যালাইনের জন্যই মৃত্যু ঘটেছে সেই প্রসূতির । সেই ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি । পাশাপাশি মৃত প্রসূতির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে 50 লক্ষ টাকা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি । স্থায়ী চাকরি দিতে হবে ৷ সেইসঙ্গে বাকি অসুস্থ প্রসূতিদের পরিবারকে 10 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি ।"
উল্লেখ্য, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঁচ অসুস্থ প্রসূতির মধ্যে মামণি রুইদাসের মৃত্যুতেই এই গন্ডগোলের সূত্রপাত । অভিযোগ ওঠে, চিকিৎসার গাফিলতি ও স্যালাইনের বিষক্রিয়ার ফলে মৃত্যু হয়েছে তাঁর । সেই ঘটনায় 7 জন পিজিটি-সহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার নিয়ে মোট 12 জন ডাক্তারের নামে অভিযোগ জমা পড়ে, সঙ্গে আসে সাসপেনশন অর্ডার । পরে শ্বেতা সিং নামে আরেক পিজিটির নাম অন্তর্ভুক্ত হয় এই তালিকায় । ওই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে সিআইডি । ঘটনার প্রতিবাদে গত শনিবার রাত থেকে তোষক ও মাদুর পেতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন ওই বিভাগের জুনিয়র ডাক্তাররা ।