কলকাতা, 16 জুন: একের পর এক দুর্ঘটনার জেরে ঘাতক চিনা মাঞ্জার ব্যবহার বন্ধ করতে ব্যাপক অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুলিশ । তিলজলা, তপসিয়া, কড়েয়া, বেনিয়াপুকুর এলাকায় ড্রোন নজরদারিতে রীতিমতো চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ । পাশাপাশি তল্লাশি চালানো হচ্ছে ময়দান চত্বরেও । সোমবার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে চালানো হয় তল্লাশি । সেই তল্লাশিতে উদ্ধার হল প্রচুর নিষিদ্ধ মাঞ্জা । সেই মাঞ্জা ব্যবহার করে ঘুড়ি ওড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে 2 জনকে ।
সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ব্রিগেড গ্রাউন্ডে চিনা মাঞ্জা দিয়ে ঘুড়ি ওড়ানোর অভিযোগের গ্রেপ্তার করা হয়েছে রেজা রহমান এবং মহম্মদ শহিদকে । তাঁরা দু’জনেই খিদিরপুর এলাকার বাসিন্দা । অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তাঁরা নিষিদ্ধ মাঞ্জা নিয়ে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলেন ৷ ওই দুই যুবকেরই বয়স 28 বছর । তাঁদের গ্রেপ্তার করে ময়দান থানার পুলিশ । তাঁদের কাছে উদ্ধার হয়েছে বারোটি লাটাই এবং একটি ঘুড়ি । লাটাইগুলিতে সবকটিতেই ছিল নিষিদ্ধ মাঞ্জা ।
শহরে একের পর এক দুর্ঘটনা । তার জেরে 2016 সালে এই মাঞ্জার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতীয় পরিবেশ আদালত । কলকাতা পুলিশ ঘুড়ির সুতো বিক্রেতাদের কাছে এই মাঞ্জা বিক্রির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে দেয় । বেশকিছু ধরপাকড় চালানো হয় । তারপরও এই সুতো বিক্রি বন্ধ হয়নি । তার প্রমাণ পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার মাধ্যমে । শেষ দুর্ঘটনাটিতে নাক কাটে এক যুবকের । ঘটনাস্থান শেক্সপিয়ার সরণি থানা এলাকার AJC বোস রোডের কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের বোরো অফিসের সামনে । বুধবার সন্ধ্যার সেই ঘটনায় গুরুতর আহত হন ওই যুবক । তার আগে 16 মে আক্তার খান নামে 40 বছরের এক যুবক বাইকে সায়েন্স সিটির দিক থেকে পার্কসার্কাসের দিকে যাচ্ছিলেন । সেই সময় আচমকাই তাঁর গলায় সুতো জড়িয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর গলা কেটে যায় । বাইক থেকে পড়ে যান তিনি । তাকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় ।
সেই ঘটনার সূত্র ধরে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অ্যান্টি রাউডি সেকশন এবং থানার পুলিশ কর্মীরা এর আগে একযোগে চিরুনি তল্লাশি চালান । তাতে উদ্ধার হয় 139 টি লাটাই । যাতে চিনা মাঞ্জা ছিল । ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় মোট 12 জনকে । তাঁরা সকলেই মূলত মাঞ্জা বিক্রেতা ছিলেন । পার্ক সার্কাস সহ ওই এলাকায় ঘুড়ির দোকানগুলিতে রাখা হচ্ছে কড়া নজরদারি । পাশাপাশি কোথাও ওই মাঞ্জা দিয়ে ঘুড়ি ওড়ানো হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশের ড্রোন ।
