কলকাতা, 2 জুন : "পুলিশি জুলুম বন্ধ না হলে রাজ্য জুড়ে অবিলম্বে ট্রাক ধর্মঘট শুরু হবে ।" আজ পুলিশি হয়রানির অভিযোগ তুলে একথা বলেন ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের জেনেরাল সেক্রেটারি সুভাষচন্দ্র বসু ।
তিনি বলেন, "সিভিক পুলিশের জুলুম বন্ধ না হলে সারা রাজ্যে পরিবহন ব্যবসা বিঘ্নিত হবে । সকাল থেকে রাত রাজ্যের সর্বত্র ছুটে চলেছে পণ্যবাহী ট্রাক । প্রাকৃতিক দুর্যোগেও তারা তাদের কর্তব্য পালন করে । কিন্তু প্রতি মুহূর্তেই ট্রাকচালকদের হয়রানির মুখোমুখি হতে হয় । চালকরা তাদের ব্যবসা বিপন্নের কথা জানিয়েছে । এই পুলিশি অত্যাচার ও জুলুম এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে ভবিষ্যতে ট্রাক ধর্মঘট হতে চলেছে । প্রত্যেকটা ট্র্যাফিক গার্ডে আগে দিনে ট্রাক পিছু 980টি কেস দেওয়া হত । কিন্তু সেখানে এখন 1360টি কেস দিতে হয় । কে বাড়িয়েছে, কার নির্দেশে হয়েছে সেটা জানি না । সমগ্র দেশের মধ্যে এই রাজ্যে পুলিশের সমস্যা ভয়ংকর ভাবে বেড়ে চলেছে । ট্র্যাফিক পুলিশ, সিভিক পুলিশ, গ্রামীণ পুলিশের জুলুম চলছে রাজ্যের সমস্ত জায়গায়। বিশেষ করে সিভিক পুলিশের দৌরাত্ম্য যেভাবে বেড়েছে তাতে নাজেহাল হয়ে উঠছি আমরা । সিভিক পুলিশের অধিকার নেই কোনও ট্রাক চালকের কাছ থেকে কাগজ দেখার । সেটা একমাত্র ট্র্যাফিক পুলিশ বা থানার সাব-ইন্সপেক্টরাই দেখতে পারেন । কাগজ দেখার নাম করে সিভিক পুলিশ এখানে টাকা আদায় করছে ট্রাক চালকদের কাছ থেকে । ফলে স্বাভাবিকভাবেই খরচ বেড়ে যাচ্ছে যার বোঝা চাপছে সাধারণ মানুষের ওপরে। আইন বহির্ভূতভাবে পুলিশ কাজ করছে । পুরো বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক, এবং পরিবহন মন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি । এখনও পর্যন্ত সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি ।"
পুলিশ এক একটা ছোটো ট্রাকের থেকে 15 হাজার টাকা করে অন্যায় ভাবে আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন সুভাষবাবু । মুখ্যমন্ত্রী, পরিবহন মন্ত্রী এবং রাজ্য পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে বহুবার বৈঠক করেছেন বলে জানান তিনি । কিন্তু কোনভাবেই সমস্যার সমাধান হয়নি । সুভাষবাবু আরও বলেন, "আমি অনুরোধ করছি পুলিশের জুলুম থেকে আমাদের বাঁচান । পশ্চিমবঙ্গে 7 লাখ পণ্য পরিবহন গাড়ি চলছে এবং 80 লাখ লোক এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন । রাজ্যে যেখানে কর্মসংস্থান নেই সেখানে লাভজনক একটি শিল্পকে এই ভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে । গাড়ির পারমিট, রোড ট্যাক্স থেকে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে । তারপরও কেন এত পুলিশি হয়রানি জানি না ।" তিনি আরও বলেন, "ওভারলোডেড ট্রাকের জন্য রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে, ব্রিজ ভেঙে পড়ছে । সেদিকে সরকারের নজর নেই । অবিলম্বে যদি সমস্যার সমাধান না হয়, আমরা সব গাড়ি বন্ধ করতে বাধ্য হব । পুলিশের জুলুম বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলন করব এবং সব ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেব । ট্রাক ধর্মঘট শুরু হলে স্বাভাবিকভাবেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি হবে ।"