কলকাতা, 8 জুলাই: রাজ্যে রক্তস্নাত পঞ্চায়েত ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুপস্থিতি নিয়ে যখন নির্বাচন কমিশনার এবং বিএসএফের আইজি তথা নির্বাচনে আদালত নিয়োজিত কেন্দ্রীয় বাহিনীর কো-অর্ডিনেট সতীশচন্দ্র বুদাকোটির মধ্যে চরম সংঘাত তৈরি হয়েছে, তখন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে ভোটের ময়দানে কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় !
এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত তৃণমূল, এমনই অভিযোগ শাসক দলের । তাদের দাবি, সবটাই ঘটেছে রাজ্যপালের উস্কানিতে ও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির অঙ্গুলি হেলনে । রাজ্যের শাসক দলের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় বাহিনীতে ভোট চেয়ে আদালতে যাওয়া হল৷ সেখানে কেন্দ্র কেন স্পষ্ট করে বলল না যে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে পারবে না তারা ? আজ এই অশান্তি আজ এই রক্তপাতের দায় কীভাবে অস্বীকার করে কেন্দ্রীয় সরকার ?
প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেস এদিন দাবি করেছে যে সীমান্তের সুরক্ষাকে উপেক্ষা করে রাজ্যে ভোটের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছে দিতে হবে এমন অবস্থা কেন্দ্রের তাদের হাতে যে পর্যাপ্ত রিজার্ভ ফোর্স নেই, সে কথা কেন লুকিয়ে যাওয়া হল । এ দিন সবকিছুর পিছনেই সুপরিকল্পিত চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল । তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, রাজ্যকে বদনাম করতেই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল মিলিতভাবে এই চক্রান্ত করেছে ।
ভোটপর্ব শেষের পর তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং ব্রাত্য বসু । তাঁরা আজকের নির্বাচনে পর্যাপ্ত বাহিনী না থাকার জন্য কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলেছেন । তাঁদের বক্তব্য, বিরোধীদের অবাধে লুঠপাট ও হত্যালীলার চালানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই পাঠাবো বলার পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হল না । কেন্দ্রীয় বাহিনী যে পাঠানো হবে না, এই তথ্য সঠিক সময় কমিশনকে না দেওয়ার জন্য কমিশনও তা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করতে পারেনি । এর দায় কীভাবে অগ্রাহ্য করে কেন্দ্রীয় সরকার ।
কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘কমিশন ভোটের অ্যারেঞ্জমেন্ট করছে ৷ রাজ্য সরকার তাকে সাহায্য করছে । কেউ যদি নির্দিষ্টভাবে পরিকল্পনা করে থাকে আমি ওকে মারব । সেই বিষয়টা শুধু সিস্টেমে রেখে আটকানো সম্ভব নয় । আসলে আমরা যে চক্রান্তের কথা বলছি, সেই চক্রান্তের মানে কী ? চক্রান্তের মানে তৃণমূল কংগ্রেসকে মারতে হবে । বাংলায় খারাপ ঘটনা ঘটিয়ে দেশকে দেখাতে হবে এই রাজ্যে কত হিংসার ঘটনা ঘটে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এইভাবে কেউ যদি চক্রান্ত করে, তাকে কোনও সিস্টেম দিয়ে থামানো যেতে পারে ! এই ভাবে নির্বাচন কমিশনকে ব্যর্থ বা সফল মূল্যায়ন করা বোধহয় সঠিক হবে না ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী সঠিক সময় না আসাটা আসলে নির্বাচন কমিশনকে বিড়ম্বনায় ফেলার চক্রান্ত । আসলে এর মাধ্যমে সিস্টেমটাকে গন্ডগোল করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে । কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারতো । কারণ এক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে রাজ্যকে বদনাম করা হবে বলে টার্গেট নেওয়া হয়েছিল ।’’