কলকাতা, 7 জানুয়ারি : মধ্য কলকাতার মল্লিকবাজার থেকে পার্কসার্কাস ময়দান । দূরত্বটা এক কিলোমিটারেরও কম । এত স্বল্প দৈর্ঘ্যের প্রতিবাদ মিছিল কলকাতার মানুষ গত কয়েক বছরে দেখেনি । বৃহস্পতিবার দুপুরবেলা এইরকম একটি স্বল্পদূরত্বের প্রতিবাদ মিছিল দেখল শহর কলকাতা । এনআরসি, সিএএ এবং সাম্প্রতিক কৃষি আইনের প্রতিবাদে পথে নামলেন কলকাতার প্রান্তিক রূপান্তরকামী সমাজের মানুষেরা ।
মিছিল শেষ হল সেই পার্কসার্কাস ময়দানে । যেখানে গত বছর জানুয়ারি মাসেই সংগঠিত হয়েছিল এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে লাগাতার গণঅবস্থান । রাজনীতিবিদ, সমাজের বিদ্বজন থেকে শুরু করে বহু ছাত্রছাত্রী এবং সমাজের সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ করেছিল । বৃহস্পতিবার ছিল সেই আন্দোলনের বর্ষপূর্তি ।
আজ সেই উপলক্ষে এই অভিনব স্বল্পদূরত্বের প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত হল শহর কলকাতার বুকে । আয়োজক সমাজের প্রান্তিক রূপান্তরকামী সমাজের মানুষেরা । আজ যাদের মধ্যে অনেকেই সমাজের অকারণ ঘৃণা এবং লাঞ্ছনার শিকার । কলকাতা সমাজের পরিচিত মুখ এবং সমাজকর্মী অনুরাগ মৈত্রেয়ির কথায়, "এনআরসি, সিএএ এবং সাম্প্রতিক কৃষি আইনের মতো একের পর এক জনবিরোধী নীতির মাধ্যমে দেশের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলছে এই কেন্দ্রীয় সরকার। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলেই বিনা বিচারে জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে একের পর এক মানুষকে । আমরাও এই সমাজেরই অঙ্গ । এই মিছিল থেকে আমাদের আরও দাবি, সমস্ত বেআইনিভাবে আটক রাজনৈতিক বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি । তাই আজ আমরা এই মিছিলের আয়োজন করেছি এবং সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে মিলিত হতে ডাক দিয়েছি । "
আরও পড়ুন, সংক্রমণ এড়াতে গঙ্গাসাগরে কী সুরক্ষাবিধি ? হলফনামা চাইল হাইকোর্ট
অনুরাগদের এই ডাক কিছুটা হলেও সফল হয়েছে । মিছিলে অংশ নিয়েছে কলকাতা এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ মানুষ । এমনই একজন হলেন আরুবা খাতুন, যিনি মিছিলের খবর পেয়েই হাওড়া জেলার পিলখানা থেকে অংশগ্রহণ করতে দৌড়ে এসেছেন । তিনি বলেন, "এটা আমার স্বভাব বলতে পারেন । যখনই কোনও সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের খবর পাই, তখনই সেখানে অংশ নিতে দৌড়ে যাই । এর আগেও আমি বহু এনআরসি, সিএএ - বিরোধী প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছি ।পার্কসার্কাস ময়দানে আয়োজিত এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে লাগাতার গণঅবস্থানে ছিলাম । তার আগে তিন তালাক বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলাম। এই মুহূর্তে কৃষক আন্দোলন নিয়ে প্রতিবাদের খবর পেলে সেখানে যথাসম্ভব পৌঁছানোর চেষ্টা করি । " মিছিলে গীটার এবং ডাফলির তালে "আজ়াদি,আজ়াদি" স্লোগান তোলে মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীরা ।