ভাঙড়, 15 জুন: পঞ্চায়েতের মনোনয়ন জমা দেওয়াকে ঘিরে গত তিন দিন ধরেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি বারুইপুর জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণাধীন ভাঙড় এলাকায় ৷ গত দুদিনের রেশ ধরেই বৃহস্পতিবারও সকাল থেকেই সেখানে শুরু হয় ব্যাপক গণ্ডগোল ৷ ইটবৃষ্টির পাশাপাশি মুড়ি-মুড়কির মতো হতে থাকে বোমা বর্ষণ । এরই মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে ব্যাকফুটে যেতে দেখা গেল পুলিশকে ৷ এলাকায় গিয়েও কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে অন্যত্র সরে গেলেন রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা । এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এডিজি নজরুল ইসলাম ।
ইটিভি ভারতকে তিনি জানিয়েছেন, কোনও দায়িত্বশীল পুলিশ আধিকারিক এইভাবে তাঁর নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের ঘটনাস্থলে রেখে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যেতে পারেন না । এতদিন ধরে ওই এলাকায় বোমা বারুদ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে এবং তার খবর রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা আধিকারিকরা জানতেই পারলেন না, এটিও পুরোপুরি ভুল বলে দাবি করেছেন তিনি । রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এডিজি নজরুল ইসলাম ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, পুলিশ সব জানে । কিন্তু পুলিশকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ ফলে পুলিশ নিজের কাজ করতে পারছে না ।
এই বিষয়ে নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই সময় পুলিশ যথেষ্ট ব্যাকফুটে খেলছে । ফলে পুলিশকে এখন ঘুরে দাঁড়াতে হলে আর্মড ফোর্স বা সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে লাঠিচার্জ করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে ।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে অশান্তি, মমতার ঢাল বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ ও ত্রিপুরা
এ দিন সকাল থেকেই ভাঙড়ে উত্তেজনা পারদ চড়তে থাকে । মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে ভাঙড়ের পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয় । মনোনয়ন পেশ করাকে কেন্দ্র করে শাসকদলের সমর্থক এবং আইএসএফের সমর্থকরা একে-অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন । পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে আইএসএফ এবং তৃণমূল সমর্থকরা বোমা ছুড়তে থাকেন বলে অভিযোগ । ইতিমধ্যেই প্রচুর পরিমাণে পুলিশ এবং র্যাফ ঘটনাস্থলে মোতায়ন করা হয়েছে । এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে আটক করে স্থানীয় কাশীপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে বারুইপুর জেলা পুলিশ সূত্রে খবর মিলেছে ৷