কলকাতা, 23 জুন: সংশোধনাগার থেকে ফিরে এসে এ বার ফের রাজ্য পুলিশে যোগ দিতে চলেছেন নারদ কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া রাজ্য পুলিশের আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জা । 2019 সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি যখন গ্রেফতার হয়েছিলেন, সেই সময়ে তিনি বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন । ভবানী ভবন সূত্রের খবর, বন্দিদশা ও বিভিন্ন আইনি জটিলতা কাটিয়ে এ বার স্পেশাল ডিউটিতে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টরেটের এসপি ব়্যাংকে যোগ দিতে চলেছেন আইপিএস সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা । তবে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য তাঁকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি ।
নারদ কাণ্ডে স্টিং অপারেশনে বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার এসএমএইচ মির্জাকে স্পষ্টভাবে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল । এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের মুখে পড়তে হয় তৎকালীন পুলিশ সুপারকে ৷ পরে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই । এর পর দীর্ঘদিন তাঁকে সংশোধনাগারে কাটাতে হয় । পরে অবশ্য নিজের ছেলের অসুস্থতার কথা তুলে ধরে জামিন পান তিনি । এরপর দীর্ঘদিন দেখা যায়নি এই আইপিএস আধিকারিককে ।
নারদ কাণ্ডে 2014 সালে স্টিং অপারেশন করা হয়, কিন্তু তা প্রকাশ্যে আসে 2016 সালের নির্বাচনের আগে । একটি ভিডিয়োয় শাসকদলের বিভিন্ন নেতানেত্রীদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল । সেই ঘটনাতেই সেই সময়ের বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার এসএমএইচ মির্জাকেও টাকা নিতে দেখা যায় । যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেছি ইটিভি ভারত ৷ অনেকেরই মত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্যই ফিরিয়ে আনা হচ্ছে আইপিএস আধিকারিক এসএমএইচ মির্জাকে ৷
আরও পড়ুন: আইপিএস মির্জার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিতে পারবে সিবিআই
নারদ স্টিং অপারেশন কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া আইপিএস অফিসারকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার বিষয় ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশে শোরগোল পড়ে গিয়েছে । যদিও এই বিষয়ে কোনও পুলিশকর্তা মুখ খুলতে চাননি । কিন্তু রাজ্য পুলিশের স্পেশাল ডিরেক্টরেট পদে এসএমএইচ মির্জা কী দায়িত্ব পালন করবেন, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু স্থির হয়নি । গ্রেফতারির পরেই কম্পালসারি ওয়েটিং-এ পাঠানো হয় আইপিএস এসএমএইচ মির্জাকে ৷ তাঁকে সাসপেন্ডও করেছিল রাজ্য পুলিশ । ভবানী ভবন সূত্রের খবর, এ বার সেই সাসপেনশন অর্ডার কাটিয়েই তিনি পুনরায় রাজ্য পুলিশে যোগ দিতে চলেছেন ।
এর আগে, রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যুর মামলায় নাম জড়িয়েছিল আইপিএস আধিকারিক জ্ঞানবন্ত সিং-এর ৷ সেই সময় কলকাতা পুলিশের ডিসি ডিডি ছিলেন তিনি ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এসে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছিল ৷ তাঁকে দীর্ঘকালের জন্য পাঠানো হয়েছিল কম্পালসারি ওয়েটিং-এ ৷ কিন্তু পরে দেখা যায়, সিবিআই-এর পেশ করা চার্জশিটে নাম ছিল না জ্ঞানবন্তের ৷ এরপরেই ফের জ্ঞানবন্ত সিং-কে রাজ্য পুলিশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে মর্যাদাপূর্ণ ডিআইজি পদ দেওয়া হয় ৷ তাঁকে করা হয় বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার ৷ তারপরই উত্তরোত্তর তাঁর পদোন্নতি ঘটে ৷ স্পেশাল আইজি, তারপর আইজি আইনশৃঙ্খলা আর এখন এডিজি এসটিএফ-এর গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলাচ্ছেন জ্ঞানবন্ত সিং ৷ ভবিষ্যতে তাঁর পথ ধরেই কি গ্রেফতার হওয়া ও রাজ্য পুলিশ থেকে সাসপেন্ড হওয়া এসএমএইচ মির্জাও পাবেন রাজ্য পুলিশের গুরুদায়িত্ব ? তার উত্তর দেবে সময় ৷