কলকাতা, 28 মার্চ: শেষ পর্যন্ত সব অনিশ্চিয়তা কাটিয়ে আগামিকাল বুধবারই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ হতে চলেছে শহিদ মিনারে (TMCP Rally at Shahid Minar) ৷ বাংলার শাসক দলের ছাত্র ও যুব কর্মী-সমর্থকরা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ৷ মঙ্গলবার তারই প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিল তৃণমূলের ছাত্র-যুবরা (TMCP Meeting Preparation) ৷
এই সমাবেশ নিয়ে সেনাবাহিনীর অনুমোদন ঘিরে প্রথমে কিছুটা টানাপোড়েন হয়েছিল ৷ সেই সমস্যা মেটার পর মঙ্গলবার সকালে আবার অনিশ্চিয়তা তৈরি হয় ৷ কারণ, শহিদ মিনারে যেখানে টিএমসিপি-র সভা হবে, তার 100 মিটারের মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের ধর্নামঞ্চ রয়েছে । সেখানে সংগ্রামী যৌথমঞ্চ বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে ধরনা চালাচ্ছে ৷ তাদের তরফে এদিন হাইকোর্টে মামলা করা হয় ৷ অভিষেকের সভা অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয় ৷
কিন্তু তাদের আবেদনে হাইকোর্ট সায় দেয়নি ৷ কিন্তু সভার অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্তও বেঁধে দিয়েছে (Calcutta High Court Guideline on TMCP Meeting) ৷ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ হল, সভা এলাকার প্রবেশ ও বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তা সমস্ত জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে মুড়ে ফেলতে হবে ৷ এমনকি পুরো সভার ভিডিয়োগ্রাফিও করা হবে । পাশাপাশি সভায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে পুলিশকে । দ্বিস্তরীয় ব্যারিকেড থাকবে, বাঁশের পাশাপাশি টিন দিয়েও ওই সভাস্থল মুড়ে রাখতে হবে । সেই কাজও এদিন করা হয়েছে ৷
আদালত জানিয়েছে, ওই সভা থেকে কোনোরকম উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না । সভা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকার ব্যারিকেড খুলে ফেলতে হবে । সেই নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার টিএমসিপির-র তরফে সভার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ৷ উত্তর কলকাতার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শান্তিরঞ্জন কুন্ডু বলেন, "সব নির্দেশ মেনেই আমরা ব্যবস্থা করছি । উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জায়গা থেকে শুধু ভিড়ের জন্য আসতে বারণ করা হয়েছে । বাকি সবাই আসবে ।’’
অন্যদিকে আগামিকাল গণ অনশনের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীরা । শহিদ মিনারে তাদের যে ধরনা মঞ্চ রয়েছে, সেখানেই অনশন করে তাঁরা আন্দোলনের সামিল হবেন । তবে তৃণমূলের এই সভা তাদের কাছে ‘সার্কাস’ হলেই জানাচ্ছেন আন্দোলনকারী সরকারি কর্মী চন্দন চট্টোপাধ্যায় ।
তিনি বলেন, "অশান্তি করার জন্যই এই ভাবনা । শহিদ মিনার ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা ছিল সভা করার । তবে তা না করে তাঁরা বেছে নিয়েছেন শহিদ মিনারের সামনে । তাও গন্ডগোল করার বা প্ররোচনামূলক মন্তব্য করার চেষ্টা করা করতেই পারে ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে আজকের কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে সব জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এরকম কোনও ঘটনা যাতে না ঘটে, তাই জন্যই টিনের ব্যারিকেড দেওয়া হচ্ছে । টিনের ব্যারিকেড দেওয়া হয়, তখনই যখন সার্কাস চলে । কাল এখানে একটা সার্কাস হবে । তবে যদি কোনও অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করেন, তাহলে তার দায়িত্ব পুলিশ ও নেতৃত্বকে নিতে হবে ।"
আরও পড়ুন: শহিদ মিনারে অভিষেকের সভায় শর্তসাপেক্ষে অনুমতি হাইকোর্টের