কলকাতা, 2 মার্চ: জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতার বড়সড় প্রমাণ পেশ করল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ অতীতে গোয়া বা ত্রিপুরায় না-পারলেও মেঘালয়ে বিধানসভা নির্বাচনে অপেক্ষাকৃত ভালো ফল করল ঘাসফুল শিবির। সকালে ব্যাপক আশা জাগিয়ে শুরু করে দিনের শেষে ততটা ভালো ফল না-হলেও ঘাসফুল ফুটল মেঘালয়ে। প্রথমবার লড়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যে জিততে না-পারলেও সেই রাজ্যের মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মেঘালয়ে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বলছে 5টি আসনে জিততে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC wins five seats in Meghalaya assembly election 2023)। সরকার গঠনের লক্ষ্য নিয়ে নামলেও সেই লক্ষ্যপূরণ হয়নি। তবে বিজেপির থেকে বেশি ভোট পেয়েছে রাজ্যের বর্তমান শাসক দল।
প্রসঙ্গত, এবার বিধানসভা নির্বাচনে মেঘালয়ে বাংলার উন্নয়ন মডেলকে তুলে ধরেছিল এই রাজ্যের শাসকদল। ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গের মতো প্রত্যেক বাড়ির মহিলাদের হাজার টাকা করে ভাতা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল ৷ একইভাবে যুবকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ওয়াইকার চালু করেছিল তৃণমূল। কিন্তু শেষপর্যন্ত ভোট বাক্সে এই সব প্রতিশ্রুতি কোনওভাবেই কাজে আসেনি। এদিন মেঘালয় ভোট গণনার শেষে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক টুইট করে মেঘালয়ের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ৷ একইসঙ্গে তিনি লিখেছেন, "আমাদের এত ভালবাসা দেওয়ার এবং আমাদের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য মেঘালয়ের ভোটারদের ধন্যবাদ জানাই। তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত 5 জন বিধায়ককে অভিনন্দন।" গত একবছর ধরে তার দলের কর্মীরা যেভাবে নিরলস পরিশ্রম করে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে তার জন্যও তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
একইসঙ্গে তিনি এও জানিয়ে দিয়েছেন, হেরে গেলেও তাঁর দল মেঘালয় গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে। শুরুটা এদিন ভালোই করেছিল এরাজ্যের শাসকদল ৷ সকাল ন'টায় ভোট গণনার শুরুতে এক ধাক্কায় একুশ আসনে এগিয়ে যায় তৃণমূল কংগ্রেস। এরপর দীর্ঘ সময় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় সে রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে। শেষ হাসি এসেছে কনরাড সাংমার দল। মেঘালয় নির্বাচনে তৃণমূলের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, দাদেংগ্রে কেন্দ্রে রূপা এম মারাকের জয়। এই কেন্দ্রে তিনি হারিয়েছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার দাদা জেমস পাংসাং সাংমাকে। এই কেন্দ্রে গত তিনবার টানা জিতেছিলেন তিনি। তাঁকে মাত্র সাত ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন রূপা এম মারাক।
আরও পড়ুন: সাগরদিঘিতে বাইরনের জয়, পঞ্চায়েতের লড়াইয়ের জন্য কি সিঁদুরে মেঘ দেখছে তৃণমূল ?
এছাড়াও নংথিম্মাই আসন থেকে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি চার্লস পিনগ্রোপ, সোংসক আসনে জয় পেয়েছেন স্বয়ং মুকুল সাংমা, রাজাবালা আসনে জিতেছেন মিজানুর রহমান কাজি এবং আম্পাটি আসনে জয়ী হয়েছেন মিয়ানি ডি শিরা। একদা মেঘের দেশে কমরাড সাংমার বাবা পিএ সাংমা তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ হয়েছিলেন। 2018 এখানে লড়াই করলেও দাঁত ফোটাতে পারেনি ঘাসফুল শিবির ৷ মাত্র 0.4 শতাংশ ভোট পেয়ে খুশি থাকতে হয়েছিল তাদের। এবার সেখানে পাঁচ বিধায়ক শুধু জয়ীই হননি, রাজ্যে 13 শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল। যা জাতীয় ক্ষেত্রে রাজ্যের শাসকদলের গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।