কলকাতা, 10 অগস্ট: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বক্তব্যের শুরুতেই যে অধীর চৌধুরীকে অস্ত্র বানিয়ে নিশানা করেছিলেন বিরোধী শিবিরকে, দিনের শেষে তাঁকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য লোকসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য মনে করছে এই পদক্ষেপ সঠিক হয়নি। অন্যায়ভাবে, লোকসভা থেকে বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলেও প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের। অতীতে রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলেও দলের তরফে জানানো হয়েছে। একইভাবে বৃহস্পতিবারও অন্যায়ভাবে কংগ্রেসের দলনেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এদিন অধীরের সাসপেনশনের বিষয়ে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ালেও প্রধানমন্ত্রীর অধীর খোঁচায় অন্য সুর শোনা গিয়েছে তৃণমূলের গলায়। এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "অধীর চৌধুরীকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে কথা বলছেন, তাতে মনের ভেতরের কথা সামনে চলে আসছে।" এদিন কুণাল আরও বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর অধীর চৌধুরীকে নিয়ে এত দরদ কিসের! আজকে অধীর চৌধুরীকে তো বলতে দেখা গিয়েছে। তারপরও অধীর চৌধুরীকে নিয়ে বলছেন প্রধানমন্ত্রী। তার মানে অধীর চৌধুরী, নরেন্দ্র মোদির হাত গুটিয়ে রাখা পাঞ্জাবীর আস্তিনের মধ্যে থাকা কোনও তুরুপের তাস। যাকে বহরমপুরে জিততে সাহায্য করবে বিজেপি! যাকে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে কাজে লাগে।"
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "এই মুহূর্তে ইন্ডিয়া নামটা শুনেই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে প্যানিক রি-অ্যাকশন হচ্ছে। তখন পশ্চিমবঙ্গে ইন্ডিয়ার অন্যতম স্তম্ভ মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনওভাবে ডিস্টার্ব করার জন্য অধীর চৌধুরীকে অক্সিজেন দেওয়ার কাজটি আসলে নরেন্দ্র মোদী করলেন কি না, সেটা অবশ্যই ইঙ্গিতবাহী হয়ে থাকবে।"
আরও পড়ুন: 'অনৈতিক' আচরণের জেরে লোকসভা থেকে সাসপেন্ড অধীর চৌধুরী
প্রসঙ্গত, কুণাল ঘোষ যখন এই কথাগুলি বলছেন, তখনও পর্যন্ত লোকসভায় অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন ঘোষণা করা হয়নি। এদিন অবশ্য লোকসভায় অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন ঘোষণার পর 'ইন্ডিয়া'র জোটসঙ্গী হিসেবে কংগ্রেসের পাশেই দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। এক্ষেত্রে অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, "প্রধানমন্ত্রী যে উদ্বিগ্ন তাঁর প্রত্যেকটা কথায় তা প্রকাশ পাচ্ছে। সে কারণেই তিনি সরকারি অনুষ্ঠানে গিয়েও বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছেন। আজকে লোকসভায় জবাবি ভাষণেও তিনি বিরোধী জোটে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছেন। আমরা দেখেছি এর আগে রাহুল গান্ধিকে যেভাবে অন্যায় ভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। আজকে অধীর চৌধুরী কেউ একই কথা বলা হল। প্রধানমন্ত্রীকে মনে রাখতে হবে তারা যাই করুক সত্যটা কিন্তু বদলে যাবে না। যে নীরব মোদি, ললিত মোদিরা হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। একইসঙ্গে এটাও বদলে যাবে না এই মুহূর্তে সে দেশের সবচেয়ে বড় দুর্নীতির নাম আদানি স্ক্যাম। অতএব এসব করে আর যাই হোক বিরোধীদের মুখ বন্ধ করা যাবে না।"