কলকাতা, 27 মে: রাজ্য়ের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং 2024-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় বুথ সভাপতিদের বিশেষ নির্দেশ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। এলাকাভিত্তিক নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকার পাশাপাশি ন্যূনতম 10-15টি পরিবারেরকে নিয়ে কোথায় কী সমস্যা আছে এবং তাদের বক্তব্য কী তাও সবিস্তারে জানতে চাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনসংযোগ বাড়ানোই এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।
আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে 100 দিনের কাজের টাকা না আটকে রাখা, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার থেকে শুরু করে সাম্প্রদায়িকতার মতো একাধিক ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে জন আলোড়ন গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলেই মনে করছে তৃণমূল ৷ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুথ স্তরের কর্মীদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, এলাকাভিত্তিক কী কী সমস্যা রয়েছে তা খুঁজে বের করতে হবে ৷ শুধু তাই নয়, সমস্যা সামনে এলে তার দ্রুত সমাধান ঘটাতে হবে বলেও সাফ জানিয়েছিলেন অভিষেক। দলীয় সূত্রের দাবি করা হয়েছে, শুধু নির্দেশ নয়। ছোট ছোট দলে ভাগ করে পাড়া ভিত্তিক এবং এলাকা ভিত্তিক কয়েকটি পরিবারকে নিয়ে আলোচনায় বসা, সামাজিক অনুষ্ঠানে সামিল হওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
এর কারণ হিসাবে দলের পদস্থ নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, কোনওভাবেই 2019-এর লোকসভা নির্বাচন ফলের পুনরাবৃত্তি 2024-এ না হয়। অর্থাৎ 2019 সালে রাজ্যের বহু পঞ্চায়েতে ভোট শতাংশের নিরিখে বিজেপির দখলে আছে। অথচ সেই সব পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজন এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন বা পারছেন বলে মনে করা হচ্ছে ৷ তাদের চিহ্নিত করে, কথা বলারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ মানুষের অধিকার নিয়ে কীভাবে তৃণমূল লড়াই করছে এবং শাসকের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিরোধীরা কীভাবে অপপ্রচার করছে সে বিষয়গুলিও সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে দলের তরফে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'চোখ খুলে গিয়েছে, মাথা নত করে ক্ষমা চাইছি', খাদিকুলের মঞ্চে মন্তব্য মমতার
নবজোয়ার যাত্রায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই স্পষ্ট করেছেন যে, কোনও ব্যক্তির রেকমন্ডেশনে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী হওয়া যাবে না। তৃণমূল তাঁদের প্রার্থী করবে না বলেও সাফ জানিয়েছেন তিনি। বরং, যারা বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের হয়ে কাজ করতে চায় সেই সব সৎ, নির্ভীক কর্মীদের বা সাধারণ মানুষের মধ্যে থেকেই প্রার্থী করা হবে। এই ছোট ছোট সমাবেশের মধ্য থেকেই অভিষেকের কথা মতো প্রার্থীকে খুঁজে বার করার চেষ্টা করা হবে বলে দক্ষিণবঙ্গ তৃণমূলের এক জেলা সভাপতি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে ঘাঘর ঘেরার হুঁশিয়ারি কুড়মি নেতার
ওই জেলা সভাপতির কথায়, "কোথাও কোনওরকম সমস্যা হলে ধৈর্য্য ধরে সমস্যার কথা শুনতে হবে। বোঝাতে হবে। বিচলিত হলে চলবে না। বিরোধীদের বক্তব্যের কাউন্টার করতে হবে। এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে দল। একইভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাধারণ মানুষের জন্য যে সমস্ত পরিষেবা মূলক প্রকল্প গুলো চালু রয়েছে এবং সে প্রকল্প থেকে সাধারণ মানুষ কি কি সুবিধা পাচ্ছেন সেগুলোকেও তুলে ধরা হবে।" তিনি আরও বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বাস করেন বুথ পর্যায় থেকেই দলের শিকড় মজবুত হয় । বুথ কর্মীরা তাদের প্রচেষ্টা এবং নিষ্ঠা দিয়ে যা অর্জন করতে পারে তা কোন উচ্চ পর্যায়ের নেতারা করতে পারে না। আগামী দিনে, বুথ সভাপতিদের একটি বড় ভূমিকা পালন করতে হবে এবং যার জন্য প্রস্তুতি এখনই শুরু করা হয়েছে।"