কলকাতা, 2 ফেব্রুয়ারি: রবীন্দ্রনাথের ভূমি শান্তিনিকেতনে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতীতে (TMC Swipe at Visva Bharati) গৈরিকীকরণের অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর অভিযোগ যে সত্য ছিল তা প্রমাণ করেছে এই ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জারি হওয়া মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞপ্তি । এটাই গৈরিকীকরণের উৎকৃষ্ট উদাহরণ, বলছে তৃণমূল কংগ্রেস ।
বিশ্বভারতীর বিজ্ঞপ্তিকে নিন্দা: প্রসঙ্গত, বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । সেই বিজ্ঞপ্তি রীতিমতো ঝড় তুলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে । এ বার তা নিয়েই নিজেদের মতামত প্রকাশ্যে আনল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ।
রাজ্যের শাসকদলের তরফ থেকে এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলা হয়, রবীন্দ্রনাথের বদলে বিশ্বভারতী অন্যের মার্গদর্শনে (Visva Bharati follows footsteps of PM) চলছে, তার ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে এখানে । এর থেকে বড় গৈরিকীকরণ আর কী হতে পারে !
বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে তোপ কুণালের: শাসকদলের তরফ থেকে দলের অন্যতম প্রধান মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা জায়গায় যখন রবি ঠাকুরের মার্গদর্শনে চলি বলার বদলে বলা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলি--তখনই বুঝে নিতে হবে এটা কার কন্ঠস্বর । তিনি বলেন, এটা কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞপ্তি হতেই পারে না । বরং তা বিজেপির আখড়ায় তৈরি একটা চিরকুট । ফলে এখানে বাস্তব, শালীনতা, রুচি, সৌজন্য--এগুলি থাকবে না এটাই খুব স্বাভাবিক ।
'রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গৈরিকীকরণের প্রয়াস': কুণাল ঘোষ আরও বলেছেন, বিশ্বকবির স্মৃতি বিজড়িত গৌরবের জায়গায় বসে যেখানে নোবেলজয়ী বাংলার গর্ব অমর্ত্য সেনকে অপমান করা হচ্ছে, আবার কখনও সেখান থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুৎসিত ভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে । এটা আর যাই হোক রবীন্দ্র সংস্কৃতি হতে পারে না । এটাই হল রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গৈরিকীকরণের প্রয়াস ।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে লাগামছাড়া আক্রমণ, বিশ্বভারতী উপাচার্যের বিরুদ্ধে পথে নামল টিএমসিপি
কেন্দ্রের অঙ্গুলিহেলনে চলছেন উপাচার্য: অন্যদিকে, দলের অপর মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেছেন, "বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা ঐতিহ্যমণ্ডিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের অঙ্গুলিহেলনে চলছেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি । কিন্তু এ ভাবে দলদাসে পরিণত হয়ে বিশ্বভারতীর গরিমাকে নষ্ট করে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এবং জনতার সমর্থনে নির্বাচিত হয়ে তিন তিনবার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কদর্য ভাষায় কথা বলেছেন উপাচার্য, তার নিন্দার ভাষা নেই ।"
'উপাচার্যের কথার সঙ্গে বিজেপি নেতাদের মন্তব্যের মিল রয়েছে': শান্তনু সেন আরও বলেন, "উপাচার্যের এই বক্তব্যের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের বক্তব্যের ভীষণ রকম ভাবে মিল খুঁজে পাওয়ার যায় । যেভাবে লোডশেডিংয়ে জেতা বিরোধী দলনেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেডি কিম বলেন, যেভাবে দিলীপ ঘোষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারমুডা পরতে বলেন, একই সুর শোনা গিয়েছে বিজেপির দলদাস এই উপাচার্যের কথায় । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যায়টা কী ! বিশ্ববরেণ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন শুধু বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গুণ রয়েছে । তার জন্য নখ-দাঁত বের করে যেভাবে আক্রমণ করছেন এর বিরুদ্ধে নিন্দার কোনও ভাষা নেই ।"