কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি : তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছে যে বক্তা তালিকায় না থাকে সত্ত্বেও দীনেশ ত্রিবেদী বক্তব্য পেশ করেছেন । এমনকী সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি প্রায় চার মিনিট বক্তৃতা রেখেছেন । শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এককালের অনুগত দীনেশ ত্রিবেদী রাজ্যসভায় সাংসদ পদ ইস্তফা দেন ও পরে দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করেন নাটকীয়ভাবে । কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন ।
এই মর্মে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ, সুখেন্দুশেখর রায় রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন শনিবার । তিনি অভিযোগ করেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বক্তার তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও ত্রিবেদীকে বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হয় এবং চেয়ারম্যান তাঁকে থামাতে কোনওরকম পদক্ষেপ নেননি ।
চিঠিতে সুখেন্দুশেখর রায় আরও দাবি করেন, শুধুমাত্র নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে দীনেশ ত্রিবেদী রাজ্যসভার অপব্যবহার করেছেন । "অবিলম্বে এই নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত," চিঠিতে দাবি করেন তিনি ।
দীনেশ ত্রিবেদী একইসঙ্গে দল এবং রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন শুক্রবার । সেই ঘোষণা তিনি রাজ্যসভাতে করেন নাটকীয়ভাবে । ইস্তফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বাংলায় যে ভাবে অন্যায়, অত্যাচার, খুন হচ্ছে সেটা তাঁকে চুপ করে সব দেখতে হচ্ছে । আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে । তাই অন্তরাত্মার ডাকে সাড়া দিয়ে ইস্তফা দিলাম । ছাড়লাম তৃণমূলও । এবার নেতাজি, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ এর বাংলায় মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চাই "।
আরও পড়ুন : দীনেশ ত্রিবেদীর দলত্যাগ কি "ব্যথা"-র কারণ হতে পারে তৃণমূলের ?
তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে ছিলেন । 2011 সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী রূপে আসীন হবার আগে তাঁর ছেড়ে আসা রেলমন্ত্রীর পদে ত্রিবেদীকেই স্থলাভিষিক্ত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । পরে রেলের ভাড়া বাড়ানো নিয়ে মমতার সঙ্গে মতবিরোধ হলে তিনি একপ্রকার বাধ্য হয়েই ইস্তফা দেন রেলমন্ত্রীর পদ থেকে । তাঁর জায়গায় রেলমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন মুকুল রায় ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকের কথায়,"সেই মুকুল রায় আজ বঙ্গ -বিজেপির এক সেনাপতি এবং তাঁর হাত ধরেই তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিচ্ছন একের পর এক তৃণমূল নেতা । আজ ত্রিবেদীও একসঙ্গে পদত্যাগ করলেন দল এবং রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে । খুব অঘটন না হলে তিনিও যে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তা বলাই বাহুল্য । এ যেন এক রাজনৈতিক বৃত্ত সম্পূর্ণ হল ।"