ব্যারাকপুর, 4 অক্টোবর: গণতন্ত্র নয় ! দেশে রাজশাহী শাসন চলছে । এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল সাংসদ-বিধায়ক-মন্ত্রী-নেতাদের হেনস্তার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এভাবেই সুর চড়ালেন ব্যারাকপুরের সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং । বুধবার ব্যারাকপুরের মামুদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দলের এক সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে আসেন এই তৃণমূল নেতা । সেখানে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দলীয় সংগঠন নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক সারেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং । বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বঞ্চনা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল সাংসদদের হেনস্তা নিয়ে মুখ খোলেন তিনি ।
এই বিষয়ে অর্জুন সিং বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার গত দু'বছর ধরে 100 দিনের কাজের প্রায় 14 হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে । বাংলার গরিব মানুষের হকের টাকা আদায় করতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব তৃণমূল সাংসদরা গত দু'দিন ধরে আন্দোলন করেন দিল্লির বুকে । কিন্তু গণতান্ত্রিক সেই আন্দোলন করতে দেওয়া হয়নি । ভারতীয় জনতা পার্টির পুলিশ গায়ের জোরে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে । অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকি তৃণমূল সাংসদদেরও ।’’
তাঁর আরও দাবি, ‘‘দিল্লির পুলিশের এই অতি সক্রিয়তা দেখে মনে হয়েছে দেশে কোনও গণতন্ত্র নেই । রাজতন্ত্র চলছে । রাজশাহী কোনও সরকার দেশ চালাচ্ছে । 24-এর লোকসভা ভোটেই এর ফল পেয়ে যাবে ভারতীয় জনতা পার্টি ৷" এরপরই বিরোধী দলনেতা, একসময়ের সতীর্থ শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য নিয়ে পালটা তাঁকে জবাব দিয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং ।
প্রসঙ্গত, কৃষি ভবনে গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না করা নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতারা যখন দিল্লির সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর তীব্র করছেন, তখন এই নিয়ে পালটা নাম না করে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে জবাব দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা । শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেন, "এটা ডায়মন্ড হারবার নয় ! চারজনের জায়গায় 40 জন নিয়ে গেলে এমনটাই হবে ৷"
এর প্রত্যুত্তরে এদিন অর্জুন সিং বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপির কোনও নেতা কী বলল তাতে কিছু আসে যায় না । অভিষেক বন্দোপাধ্যায় নিজের জন্য দিল্লিতে আন্দোলন করতে যাননি । বাংলার মানুষের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়েছেন তিনি । অভিষেক তো স্পষ্ট বলেছেন 100 দিনের কাজে যদি কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকে, তাহলে এফআইআর, গ্রেফতার করুক ! এভাবে বাংলার মানুষের আটকে রাখার কোনও মানে নেই । এর বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই ৷"
এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দিলে বাংলার মানুষের প্রাপ্য টাকা শাসকদলের বিধায়কদের বেতন থেকে মেটানো হবে বলে দিল্লির বুকে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই বিষয়ে অর্জুন সিং-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "উনি যে ঘোষণা করেছেন পার্টি নেতৃত্ব হিসেবে আমরা সকলেই মানতে বাধ্য ৷"
অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে ইডির তলব প্রসঙ্গে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, "এর পিছনে প্রতিহিংসা রয়েছে । তৃণমূল দলের প্রতিষ্ঠা হয়েছে লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে । ফলে বিজেপি ভাবছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের আন্দোলন দমানো যাবে ! মূর্খের স্বর্গে বাস করছে ওরা । তৃণমূলকে চমকে ধমকিয়ে কিছু করা যাবে না ৷"
আরও পড়ুন: দিল্লিতে পুলিশি হেনস্তা, লক্ষ্মীবারে এক লক্ষ কর্মী-সমর্থক নিয়ে রাজভবন অভিযানের ডাক অভিষেকের