কলকাতা, 11 মে : রাজ্যে রেশন সামগ্রী নিয়ে কালোবাজারি চলছে । এমনই অভিযোগ তুলে ফের সরব রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। তাঁর বক্তব্য, "রেশনের চাল নিয়ে চূড়ান্ত কালোবাজারি হচ্ছে। শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা চাল চুরির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়েছেন । এখনও মানুষজনের মধ্যে যথাযথ পরিমাণে খাদ্যদ্রব্যের বণ্টন হচ্ছে না । কিন্তু মনে রাখতে হবে রেশন কোনও ভিক্ষা নয়, নাগরিকের বৈধ প্রাপ্তি । তাই স্বচ্ছ রেশন বণ্টনের ব্যবস্থা করতে হবে ।"
আবদুল মান্নান বললেন, "কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ডাল দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল । কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্যের নানা জেলায় সেই গম পৌঁছায়নি। কেন্দ্রীয় সরকার যে চাল দিচ্ছে মাঝপথে সেই চাল হাতবদল হচ্ছে। শাসক দলের নেতারা রেশনের চাল ছিনতাই করে সেই চাল মানুষকে দিচ্ছে । বোঝাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার নয়, দলগতভাবে তারাই দিচ্ছে। রাজ্যের এই ভয়ঙ্কর সময়েও ভোটের রাজনীতি করছে শাসক দলের নেতারা।"
রেশন ব্যবস্থাকে নিয়ে কটাক্ষ করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, "রেশন ব্যবস্থায় গলদ আছে । একথা মেনেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। সেজন্য তড়িঘড়ি রাজ্যের খাদ্যসচিবকে বদলি করেছেন। তারপরও শিক্ষা হয়নি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। কেন্দ্রের চাল ঘুরপথে চলে যাচ্ছে রাজ্যের সব চালকলগুলিতে। সেই চাল বস্তা তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে যাচ্ছে।" রাজ্যের প্রতিটি রেশন দোকানে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার আবেদন জানিয়েছেন আবদুল মান্নান । তাঁর পরামর্শ এই কমিটি নজরদারি চালাবে রাজ্যের গণবণ্টন ব্যবস্থার উপর ।
হঠাৎ করে রেশনে গম বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "বহু মানুষ শুধু ভাত নয়, রুটিও খান। রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনার রেশন কার্ডে মাথাপিছু তিন কেজি করে গম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল খাদ্য দপ্তর । হঠাৎ করে মাথাপিছু 5 কেজি করে চাল দিয়ে, রেশনে গম দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হল। গরিব মানুষকে বঞ্চিত করল রাজ্য সরকার।"
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী জানান, অবিলম্বে চাল দেওয়ার পাশাপাশি পুরনো পদ্ধতি মেনে গম দেওয়াও শুরু হোক রেশনে। বহু মানুষ এখনও গণবণ্টন ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত হননি। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তাঁদের। প্রত্যেক মানুষের জন্য রেশন ব্যবস্থা স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠুভাবে কার্যকর করতে হবে ।