আগরতলা ও কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর : খোয়াই থানার মামলায় পুজো পর্যন্ত কোনও তৃণমূল নেতাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না পুলিশ । বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিল ত্রিপুরার হাইকোর্ট । স্বাভাবিক কারণেই হাইকোর্টের এই নির্দেশে স্বস্তি পেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরও বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা । আপাতত পুজো পর্যন্ত অভিষেক, কুণাল ঘোষদের আর কোনওরকম জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না পুলিশ । ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অখিল আব্দুল হামিদ খুরেশি আজ এই নির্দেশ দিয়েছেন ।
7 অগস্ট আগরতলা থেকে আমবাসা যাওয়ার পথে তৃণমূলের ছাত্র-যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত ও সুদীপ রাহাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে । সেই রাতে দেবাংশুদের খোয়াই থানায় আটক রাখে পুলিশ । পরের দিনই সেখানে পৌঁছন অভিষেক । থানার ভিতর সেদিন অভিষেকের সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকের তর্কাতর্কি, বাদানুবাদের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল । থানায় অভিষেকের সঙ্গে ছিলেন কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসুরা ৷
পুলিশের তরফ থেকে সরকারি কাজে বাধা দান সহ একাধিক ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয় অভিষেক-কুণালদের বিরুদ্ধে । 21 সেপ্টেম্বর খোয়াই থানায় গিয়ে কুণাল ঘোষ গিয়ে হাজিরা দেন । সেদিনই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন । বৃহস্পতিবার দুপুরেও কুণাল আগরতলা আইএলএসে চিকিত্সাধীন । সেসব দেখেই এদিন কার্যত বিপ্লব দেবের পুলিশকে তুলোধনা করেছে হাইকোর্ট ।
আরও পড়ুন, Abhishek Banerjee : আপাতত ত্রিপুরা সফর বাতিল, আদালতের নির্দেশ মেনেই পরবর্তী কর্মসূচি অভিষেকের
এদিন তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে খোয়াই থানায় দায়ের হওয়া মামলায় হাইকোর্ট পুজো পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেওয়ার পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি অখিল আব্দুল হামিদ জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত ওই মামলায় পুলিশ তদন্ত করতে পারবে না ৷ এমনকি পাঠানো যাবে না কোনও নোটিসও । পুজো পর্যন্ত কোনওরকম জিজ্ঞাসাবাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ।
তৃণমূল বলছে, কেন কুণাল ঘোষ অত শরীর খারাপ নিয়েও খোয়াই থানার নোটিশে সাড়া দিতে গিয়েছিলেন, আজ ত্রিপুরা হাইকোর্টে তা হাড়ে হাড়ে বুঝল পুলিশ। তৃণমূলের এই কোয়াশিং পিটিশনের শুনানিতে প্রথম দিন অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেছিলেন, পুলিশের তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে । এদিন প্রধান বিচারপতির এজলাসে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা ও বিশ্বজিত্ দেব বলেন, প্রশাসন মিথ্যে বলেছিল । তদন্ত শেষ হয়ে যাওয়ার দাবি করেও তারপর কুণাল ঘোষকে নোটিস পাঠিয়েছে । উনি 21/9 কমপ্লাই করেছেন। প্রধান বিচারপতি সেই নোটিশ ও নথি দেখতে চান । আইনজীবীরা তা পেশও করেন । আর তাতেই প্রমাণ হয়ে যায় পুলিশ দ্বিচারিতা করছে । কুণালের নথি দেখার পর ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অখিল আব্দুল হামিদ খুরেশি বলে দেন, আর কাউকে নোটিস পাঠানো যাবে না। পরবর্তী শুনানির জন্য রাজ্য সময় চায় । কারণ এদিনের শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন না । হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, এই মামলায় পুজোর পর ফের শুনানি হবে ।
আরও পড়ুন, Kunal Ghosh :অভিষেক-কুণালের বিরুদ্ধে মামলার নোটিস পাঠাল ত্রিপুরার খোয়াই থানা
এ প্রসঙ্গে ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আশিস লাল সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আদালতে এমনটা হওয়ারই ছিল । যে মামলার বাস্তবিক কোনও ভিত্তি নেই আদালতে যে তা মুখ থুবড়ে পড়বে এটাই স্বাভাবিক । শুধু আদালত নয়, আগামী দিনে মানুষের দরবারেও মুখ থুবড়ে পড়বে বিপ্লব দেবের সরকার । এ রাজ্যে সরকার পতন শুধু সময়ের অপেক্ষা ।