কলকাতা, 4 ডিসেম্বর: রাজনীতিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা নিয়ে ফের সওয়াল করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সোমবার উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতি বা যেকোনও পরিসরে আমি মনে করে একটা ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার ৷’’
বছর দুয়েক আগে রাজনীতিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷ এই নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে ৷ তার পর এই কথা আর তাঁর মুখে এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি ৷ যা আবার শোনা গেল সোমবার ৷
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে কেন তিনি এই কথা বললেন ? আসলে গত 23 নভেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বসেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশন ৷ শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেই অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে পারেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেদিন তিনি যেমন স্বশীররে অনুপস্থিত ছিলেন সেখানে, তেমনই অধিবেশন স্থলে তাঁর কোনও ছবিও ছিল না ৷ পরে এই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ৷
এ দিন কলকাতা বিমানবন্দরে সেই প্রসঙ্গই প্রথমে সাংবাদিকরা তোলেন অভিষেকের সামনে ৷ জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত মতামত কেউ কেউ দিয়েছেন ৷ দলনেত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ছবি ছিল ৷ আমার আলাদা করে ছবি না থাকতেও পারে ৷’’ এর পর তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের সামনে কুণাল ঘোষের আরও একটি বক্তব্য তুলে ধরা হয় ৷ যেখানে কুণালকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে তৃণমূলের প্রবীণ নেতারা দেহত্যাগ না করলে পদত্যাগ করবেন না ৷
এই নিয়ে বলতে গিয়ে প্রথমে অভিষেক বিষয়টিকে কুণালের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি বলে ব্যাখ্যা করেন ৷ তার পর অবশ্য ফের রাজনীতিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমার প্রসঙ্গ টানেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতিতে বা যেকোনও পরিসরে আমি মনে করে একটা ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার ৷’’ নিজের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি জানান, তরুণ-যুব কর্মীরা যতটা উদ্য়মের সঙ্গে কাজ করেন, একটা বয়সের পর সেটা সম্ভব হয় না ৷
পাশাপাশি তিনি এটাও জানিয়েছেন যে দলে সবাইকে প্রয়োজন ৷ অভিষেক বলেন, ‘‘এতদিন যাঁরা আছেন, তাঁদের অত্যন্ত প্রয়োজন ৷ ...তাঁদের অভিজ্ঞতা, তাঁদের লড়াই করার যে অভিজ্ঞতা, তাঁদের যে মানুষের জন্য কাজ করার মানসিকতা, আমি মনে করি সেটা সর্বত্র প্রয়োজন ৷ কিন্তু আমি প্রোডাক্টিভিটি যদি দেখি, আজকে প্রোডাক্টিভিটি কিছুটা হলেও কমে ৷ সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে হয়তো উনি (কুণাল) বলে থাকতে পারেন ৷’’
লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনে তাহলে কি এই বয়সের মাপকাঠি বিচার করা হবে ? এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের উত্তর, ‘‘আমি সেটা বলতে পারব না ৷ সেটা সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করবেন ৷ যেখানে আমার মতামত বা পরামর্শ দরকার হবে, আমি নিশ্চিতভাবে দেব ৷’’
কিন্তু মাস দুয়েক ধরে তাঁকে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না ৷ কোনও কোনও মহল থেকে বলা হচ্ছে যে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে ৷ এই প্রশ্নের মুখেও এ দিন পড়তে হয় অভিষেককে ৷ যা শুনে তিনি বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কারও কোনও বিরোধিতা নেই ৷ দেখা যাচ্ছে না মানে... ! আমি তো আছি ৷ দলের একটা কর্মসূচিতে আমি যাইনি ৷ বাকি সব কর্মসূচিতে তো আছি ৷’’
আরও পড়ুন: