কলকাতা, 14 এপ্রিল: ভোটমুখী বঙ্গে দু'দিনের সফরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ সফর শুরু আজ থেকে ৷ আর তা নিয়ে শুরু রাজনৈতিক টানাপোড়েন ৷ বিজেপির দাবি, অমিতের আগমনের খবরেই চাঙ্গা দলের নিচুতলার নেতাকর্মীরা ৷ তাঁদের আশা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরের সুফল আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে পাবে গেরুয়া শিবির ৷ মানতে নারাজ রাজ্যের শাসকদল ৷ তৃণমূলের পালটা বক্তব্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও ঘন ঘন বাংলায় এসেছিলেন শাহ-মোদিরা ৷ তাতে তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হয়নি ৷ বরং রেকর্ড জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দল ৷ তাই ভোটের আগে অমিতের বঙ্গসফরকে তৃণমূলের পক্ষে 'ইতিবাচক' হিসাবেই দেখছে ঘাসফুল শিবির !
অমিত শাহের বঙ্গসফর নিয়ে বৃহস্পতিবার কিছু মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ৷ যার মোদ্দা কথা হল, 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘন ঘন রাজ্য সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ প্রতিটি নির্বাচনী সভা থেকেই তাঁরা স্লোগান তুলেছিলেন, 'অব কি বার, দোশো পার' (এবার দু'শোরও বেশি) ! কিন্তু সেবার বিজেপি একশোও পার করতে পারেনি ! তাই মহুয়া মনে করেন, পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের আগে অমিত শাহের এই রাজ্য সফর আদতে তৃণমূলের জয়ের ইঙ্গিত !
একই সুর শোনা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম প্রবীণ নেতা ও সাংসদ সৌগত রায়ের গলাতেও ৷ তিনি বলেন, "আসলে অমিত শাহের রাজ্যে আসার নিট ফল শূন্য ! বিধানসভা নির্বাচনের আগেও তিনি এসেছিলেন ৷ কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি ৷ এবারও হবে না ৷ বরং তিনি যখন আগেরবার এসেছিলেন, তৃণমূল জয়যুক্ত হয়েছিল ! অর্থাৎ এবারও তেমনই ফল আশা করছেন সৌগত ৷"
তবে, তৃণমূলের এইসব যুক্তি মানতে রাজি নন বিজেপি নেতারা ৷ যেমন- এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "আসলে 2021 সালে ভয়ে ওঁদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ! আবার সেই ভয় শুরু হয়েছে ! ওঁরা ভয় পেয়েছেন ! তাই মুখে বলছেন, ভয় নেই ! নেতাদের কথা থেকেই এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷"
আরও পড়ুন: অমিত শাহ আসার আগে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকে বিজেপি
গেরুয়া শিবিরের আর এক নেতা তথা বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস তাদের জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারিয়েছে ৷ সর্বভারতীয় স্লোগান দিলেই সর্বভারতীয় হওয়া যায় না ৷ সর্বভারতীয় পদ সৃষ্টি করলেই কেউ সর্বভারতীয় হয়ে উঠতে পারেন না ৷ সেটা দেশের মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন ৷ জনবিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক দল ৷ তাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা 'দিদির সুরক্ষাকবচ' নিয়ে, 'মাদুলি' নিয়েও নিজেদের এলাকায় ঢুকতে পারছেন না ! মানুষের ক্রমবর্ধমান রোষ থেকে দৃষ্টি ফেরাতেই নানা ধরনের দুর্বল চিত্রনাট্য উপস্থাপিত করা হচ্ছে ৷ 2024 সালের 15 অগাস্ট আবারও দিল্লির লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন নরেন্দ্র মোদি ৷ আর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রাপ্ত আসনের সংখ্যা গোনা শুরু হবে 24-এর পর থেকে ৷"