কলকাতা, 8 অক্টোবর: তদন্তকারী সংস্থার সক্রিয়তাকে আত্মরক্ষার অস্ত্র বলছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজভবনের সামনে 100 দিনের কাজের দাবিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা আজ চতুর্থ দিনে পড়ল। মানুষের দাবি আদায়ের আন্দোলনে ঠায় রাজভবনের সামনেই বসে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই অবস্থায় রবিবার সকাল থেকেই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে। সকাল সকাল সিবিআইয়ের দল পৌঁছে যায় তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা ফিরহাদ হাকিম এবং মদন মিত্র-সহ একাধিক দলীয় নেতার বাড়িতে। সেইসঙ্গে তল্লাশি চলছে একাধিক বর্তমান ও প্রাক্তন পৌরপ্রধানের বাড়িতে। সিবিআইয়ের এই তৎপরতা নিয়ে এবার মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
এ বিষয়ে কুণাল এক্সে লিখেছেন, "অভিষেকের ধরনা হিট। বিজেপির উপর চাপ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে আসতে হয়েছে। তাতেও ফলশূন্য। রাজ্যপাল কোণঠাসা, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাই নজর ঘোরাতে আবার রাজনৈতিক পরিকল্পনায় নামানো হয়েছে এজেন্সিকে। এটাই বিজেপির আত্মরক্ষার অস্ত্র। কিন্তু এভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে দমানো যাবে না।" একইভাবে এই নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
তিনি বলেন, "বিজেপি যেমন চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ঠিক তেমনভাবেই কাজ করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না। সরকার আসে সরকার যায়। আজকে এনডিএ সরকার আছে কালকে অন্য কোনও সরকার আসতে পারে। কিন্তু সিবিআই এবং ইডি তো দেশে থাকবে। তাই তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে অনেক চিন্তা ভাবনা করে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সিবিআই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর আওতাধীন একটি সংস্থা। তাদের উপরেও সরকারের চাপ রয়েছে। সেক্ষেত্রে সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ৷
কুণাল ঘোষ এ কথা বললেও সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি অবশ্য এই নিয়ে পালটা তৃণমূল কংগ্রেসকেই আক্রমণ করছে। এই নিয়ে সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "এমনটা তো অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল। এতদিন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা একটু ঢিলে তালে চলছিল। আদালতের চাপের কারণেই তারা নড়েচড়ে বসেছে। এত দুর্নীতি হয়েছে সব তথ্য তদন্তকারী অফিসারদের হাতে আছে কি না, আমরা জানি না। অনেক তথ্যই এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। এখন দেখা যাক তারা কতটা তৎপরতার সঙ্গে তদন্ত করে এসব তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে পারেন।"
এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীও। তিনি বলেন, "নানা দুর্নীতির কারণে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত হচ্ছে। সেখানে অনেক রথী-মহারথীর নাম রয়েছে। বঙ্গের শাসকদলের বড় বড় মাথাদেরও নাম রয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে রেড হওয়া কোনও নতুন ঘটনা নয়। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সিবিআই বা ইডি শুধু রেড করলেই হবে না। প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে।"
আরও পড়ুন: 144 ধারার মধ্যে মঞ্চ বেঁধে কীভাবে অভিষেকদের ধরনা? মুখ্যসচিবকে চিঠি রাজ্যপালের