কলকাতা, 19 অক্টোবর : এক COVID-19 রোগীর চিকিৎসার খরচ হিসাবে সাড়ে তিন লাখ টাকা নেওয়া হলেও বিল দেওয়া হয়নি হাসপাতাল থেকে । অন্য এক COVID-19 রোগীর চিকিৎসার খরচ হিসাবে যে বিল করা হয়েছে, তাতে 28 হাজার 901 টাকা ধরা হয়েছে নন-মেডিকেল খরচের জন্য । নিউ আলিপুরে অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ ওঠে ৷ দুটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ দায়ের হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিকাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনে (WBCERC) ৷ প্রথম ঘটনায় 1.7 লাখ টাকা ও দ্বিতীয় ঘটনায় 14 হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিকাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন ৷
রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, COVID-19-এ আক্রান্ত হাওড়ার বাসিন্দা এক মহিলাকে ভরতি করানো হয়েছিল নিউ আলিপুরের বেসরকারি এক হাসপাতালে । 11 জুলাই থেকে 19 জুলাই পর্যন্ত এই রোগী ভরতি ছিলেন ওই হাসপাতালে । তাঁকে COVID-19-এর জেনেরাল বেডে রাখা হয়েছিল । এই রোগীর চিকিৎসার খরচ হিসাবে সাড়ে তিন লাখ টাকা নেওয়া হয় । অভিযোগ, এই টাকা নেওয়া হলেও বিল দেওয়া হয়নি । এক মাস ধরে মামলাটি কমিশনে রেখে দেওয়া হয়েছিল ৷ কারণ ওই বেসরকারি হাসপাতালের কাছে এই রোগীর চিকিৎসার খরচ হিসাবে যে বিল করা হয়েছিল, সেই বিল চাওয়া হয় । কমিশন জানিয়েছে, এই এক মাসে কোনও বিল দিতে পারেনি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । অবশেষে হাসপাতাল থেকে বলা হয়, এই রোগীর বিল সংক্রান্ত কাগজপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । কমিশন জানিয়েছে, অভিযোগকারী মনে হয় ঠিকই জানিয়েছেন ৷ ওই হাসপাতাল থেকে আসলে বিল দেওয়া হয়নি । এই ঘটনায়, প্রতিদিন গড়ে 20 হাজার টাকা করে নয় দিনে 1.8 লাখ টাকা ধরা হয় । এই টাকা থেকে 10 হাজার টাকা বাদ দিয়ে 1.7 লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় ওই হাসপাতালকে । কমিশন জানিয়েছে, অভিযোগকারীকে এই 1 লাখ 70 হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ মেনে নিয়েছে এই হাসপাতাল । এক মাসের মধ্যে এই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য কমিশনে ।
নিউ আলিপুরের এই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিল সংক্রান্ত আরও একটি অভিযোগ জমা পড়ে কমিশনে । এই অভিযোগের বিষয়ে কমিশন জানিয়েছে, COVID-19-এ আক্রান্ত বেহালার এক বাসিন্দাকে 13 জুন এই হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছিল । এই রোগীর চিকিৎসার খরচ হিসাবে যে বিল করা হয়েছিল, তার মধ্যে 28 হাজার 901 টাকা নন-মেডিকেল খরচ হিসাবে দেখানো হয়েছিল । এই টাকা দিতে চায়নি সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থা । কমিশন জানিয়েছে, নন-মেডিকেল এই খরচের অধিকাংশ ধরা হয়েছে PPE-র জন্য । এই খরচ ধরার বিষয়ে এই হাসপাতাল কমিশনে জানায়, এই ঘটনা COVID-19 সংক্রান্ত সরকারি সার্কুলার এবং কমিশনের অ্যাডভাইজ়রি ইশু করার আগের । স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, এই মামলায় অভিযোগকারী অংশ নেননি । তা সত্ত্বেও হাসপাতালে বক্তব্য শুনে, ওই বিল থেকে 14 হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এই রোগীর চিকিৎসার জন্য যা বিল হয়েছে, সেটা বিমা সংস্থার কাছ থেকে পেয়ে গিয়েছে এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।