কলকাতা,26 মার্চ : ওরা চায় খেলতে ৷ এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে । কিন্তু এখন তারা চার দেওয়ালে বন্দী । তা ওদের মনে প্রভাব ফেলছে অনেকটাই। আর তাই এগিয়ে এল পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের খবর রাখতে খোলা হল হেল্পলাইন নম্বর। দেওয়া হল মনোবিদ সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসকদের মোবাইল নম্বর। শিশুর যে কোনও সমস্যা নিয়ে যেখানে কথা বলা যাবে।
রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালক আশ্রমের ছাত্র মিত্রদয় ঘোষ। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বাবা উদয় ব্যস্ত থাকেন বছরভর। সেভাবে সময় দিতে পারেন না ছেলেকে। লকডাউনের প্রথম দুটো দিন বাবাকে কাছে পেয়ে আহ্লাদে আটখানা হয়েছিল সে ৷
তারপর থেকে মিত্রদয়ের বায়না, পার্কে খেলতে নিয়ে যেতে হবে। উদয়বাবু বলছেন, “ বাড়িতে থেকে এখন একটু বিরক্ত হচ্ছে মিত্রদয় । সাধারণ সময়ে স্কুলে যায় । ক্লাসের পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধূলা করে। এখন সে সব বন্ধ। বিকেল হলেই খেলতে যেতে চায় । যতটা সম্ভব বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু শিশুমন বুঝতে চাইছে না। সমস্যা তো একটু হচ্ছেই।"
কেষ্টপুরের বাসিন্দা হার্দিক গাডিয়া। নিউটাউন নারায়ণা স্কুলের ক্লাস থ্রির ছাত্র। রোজ বিকেলে পাড়ার ছোট্ট পার্কটায় সাইকেল চালাতে যায় । এখন সেটা বন্ধ । ওর বাবা বিশাল জানিয়েছেন, “সাইকেল চালানো বন্ধ। স্কুল বন্ধ। খেলাধূলা বন্ধ। এখন ওর সঙ্গে আমি ভিডিয়ো গেম খেলছি । এভাবেই ভুলিয়ে রেখেছি ।" লকডাউনের সময়টায় এটাই এখন কলকাতার শিশুদের বাস্তব চিত্র। বন্ধ ঘরে থাকতে থাকতে শিশুদের মানসিক সমস্যা হতে পারে ভেবেই এগিয়ে এসেছে রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন। তারা চালু করেছে হেল্পলাইন নম্বর। যেগুলিতে ফোন করে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন শিশুদের অভিভাবকরা ৷
এ প্রসঙ্গে শিশু কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, “এই সময়টায় শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা খুবই জরুরি। শিশুমন একটু পার্কে খেলতে যেতে চাইবেই। চাইবে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ। ওদের তো আর বোঝার ক্ষমতা নেই। সে কথা ভেবেই আমরা চালু করেছি হেল্পলাইন নম্বর। দিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট সময়। সেই সময় গুলিতে নির্দিষ্ট চিকিৎসককে ফোন করে পরামর্শ নিতে পারবেন অভিভাবকরা। ’’ শিশু কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশাল-উদয়রা।