কলকাতা, 31 মার্চ: টেরাকোটা নিয়ে তিনদিন ধরে চলল প্রশিক্ষণ শিবির ৷ জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী রাজেন্দ্র কুমারের তত্ত্বাবধানে এই প্রশিক্ষণ শিবিরে রাজস্থানের শিল্পীর হাত থেকে আট জন শিল্পী নিলেন টেরাকোটা কাজের পাঠ। 28 থেকে 30 তারিখ পর্যন্ত চলল প্রশিক্ষণ শিবির। শিল্পী জুঁই মেইনের বারুইপুরের মল্লিকপুর সংলগ্ন এলাকার স্টুডিয়োতেই হল প্রশিক্ষণ।
তবে টেরাকোটার কাজ শুধুই শিল্প নয়। এই কাজের মাধ্যমে উঠে আসে বিভিন্ন গ্রাম-জাতি ও তাঁদের জীবনযাত্রার গল্পও । তবে এখানেই শেষ নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও এই টেরাকোটার ব্য়বহার করা হয় ৷ তাঁদের কথায়, এই টেরাকোটা কাজের সাহায্যে করা হয় থেরাপিও। যার ফলে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া বহু মানুষই হয়ে ওঠে স্বাবলম্বী।
প্রায় 20 বছর ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন শিল্পী জুঁই মেইন। বারুইপুরের মল্লিকপুর সংলগ্ন এলাকায় তাঁর নিজের স্টুডিয়ো। সেখানেই তিনি এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন। এবার এই কাজেরই আরও নতুনত্ব শেখার জন্য সদূর রাজস্থান থেকে তিনি নিয়ে এসেছিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীকে। জুঁই মেইন জানান, এই কাজ আমাদের ঐতিহ্য। ফলে রাজস্থানের উদয়পুরের কাছে নাট্যদুয়ারা নামক জায়গায় মোল্লেলা নামক এক গ্রাম রয়েছে। সেখান থেকেই তিনি নিয়ে আসেন শিল্পীকে।
পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, প্রায় আটজনকে দেওয়া হয়েছে টেরাকোটা কাজের প্রশিক্ষণ। টেরাকোটা দিয়ে মূলত ঘর সাজানোর যে জিনিস তৈরি হয়, তাই প্রধানত এই প্রশিক্ষণ শিবিরে শেখানো হয়েছে। প্রথমদিন শিল্পী রাজেন্দ্র কুমার নিজে হাতে কীভাবে তৈরি করতে হয়, তা শিখিয়েছিলেন সকলকে। তারপর সবাই তা তৈরি করে দেখিয়েছেন শিল্পীকে। বর্তমানে ওই কাজগুলি শোকানার জন্য রাখা হয়েছে। ঠিক 15 দিন পর যে, যার কাজ তাঁদের দিয়ে দেওয়া হবে বলেই জানান জুঁই। তিনি বলেন, "আমাদের মূলত ঘর সাজানোর জিনিস টেরাকোটা কাজের মাধ্যমে শিখিয়েছেন শিল্পী। কেউ তাতে দেবদেবী অথবা নিজের পছন্দ মতো কাজ করেছেন ৷"
আরও পড়ুন: জি-20 বৈঠক বসছে দার্জিলিংয়ে, যোগ দেবেন 10 দেশের রাষ্ট্রদূত
পাশাপাশি তিনি জানান, ছাত্র-ছাত্রীরা শিল্পীর হাত থেকে কাজ শিখে যথেষ্ট খুশি। কলকাতায় এসে কাজ শেখাতে কেমন লাগল শিল্পী রাজেন্দ্র কুমারের? এই বিষয়ে জুঁই বলেন, "ওঁকে আমরা একদিন আমাদের শহরের আশেপাশের এলাকা ঘুরিয়েছিলাম। তাতে উনি বেশ খুশি হয়েছিলেন। এমনকি তিনি জানিয়ে গিয়েছেন তাঁর দুই ছেলেকে শান্তিনিকেতনের কলা ভবনে ভর্তি করতে চান।"