ETV Bharat / state

Utsashree problem: 'উৎসশ্রী' পোর্টাল ত্রুটিযুক্ত, প্রয়োজনে আদালতে যেতে পারে শিক্ষক মহল - পশ্চিমবঙ্গ সরকার

কোভিডকালে বাড়িতে বসে অনলাইনে অন্য স্কুলে ট্রান্সফারের আবেদন জানাতে চালু হয়েছে উৎসশ্রী পোর্টাল ৷ অথচ এই পোর্টাল নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৷ তাঁদের কাছে সঠিক কোনও নির্দেশিকাও নেই বলে জানিয়েছেন অভিযোগ করেছেন তাঁরা ৷

উৎসশ্রী পোর্টাল
উৎসশ্রী পোর্টাল
author img

By

Published : Aug 28, 2021, 2:18 PM IST

কলকাতা, 28 অগস্ট : শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির অনলাইন আবেদন জানানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দফতর 'উৎসশ্রী' পোর্টাল চালু করেছে 31 জুলাই ৷ শিক্ষক-শিক্ষিকারা আশা করেছিলেন এর মাধ্যমে সহজ প্রক্রিয়ায় বদলির আবেদন জানাতে পারবেন তাঁরা ৷ বাস্তবে তেমনটা হল না বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৷

পোর্টালে বদলির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় ২ অগস্ট থেকে । তাঁদের অভিযোগ পোর্টালটি অসম্পূর্ণ ৷ আবেদনের নিয়মকানুন বিষয়ে একাধিক জটিলতা ও ধোঁয়াশা রয়েছে । এমনকি শিক্ষা দফতরের থেকে তাঁদের কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি বা কী ভাবে এখানে আবেদন করতে হবে, তার নিয়মাবলিও প্রকাশ করা হয়নি । এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৷

31 জুলাই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও এতদিন পর্যন্ত ছিল 2015-র "দ্য ক্যালকাটা গেজেট"-এর সরকারি নোটিফিকেশনের প্রক্রিয়া অনুযায়ী কাজ চলছিল ৷ এ নিয়ে শিক্ষামহলে জোর তরজার সৃষ্টি হয় । 26 অগস্ট পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দফতর একটি নোটিস প্রকাশ করেছে । মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির অনিমেষ হালদার বলেন, "এতদিন পরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল ৷ এখন এই পদ্ধতিতে বেশ কয়েকজন এসএসসির সুপারিশপত্র পেয়ে গিয়েছেন । পোর্টালটিতে বেশ কিছু বিষয়ে চূড়ান্ত বিতর্ক এবং সমস্যা দেখা দিয়েছে । এতে সমস্যায় পড়েছেন আবেদনকারী, বিদ্যালয় প্রধান থেকে ডিআই অফিস পর্যন্ত সবাই । কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তিতে সেই জটিলতাগুলো নিরসনের সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হল না ৷ এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।"

2015-য় প্রকাশিত দ্য ক্যালকাটা গেজেট
2015-য় প্রকাশিত দ্য ক্যালকাটা গেজেট

আরও পড়ুন : Visva-Bharati : উপাচার্যের আপ্তসহায়ক সহ আধিকারিকদের ঘেরাও পড়ুয়াদের, উত্তপ্ত বিশ্বভারতী

অভিযোগ উঠেছে যে সুস্পষ্ট নির্দেশিকার অভাবে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বদলি প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ-এর রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, "নির্দিষ্ট লিখিত নিয়মাবলী না থাকায় বিদ্যালয়ের প্রধানদের মধ্যে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে মতভেদ দেখা দিচ্ছে । যে যাঁর মতো নিয়ম বানিয়ে কাজ করছেন ।" তিনি জানিয়েছেন বহু ক্ষেত্রে বিদ্যালয় প্রধান সুস্পষ্ট নির্দেশিকার অভাবের কারণে শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের ট্রানস্ফার প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে কার্যকর করছেন না । তাই প্রক্রিয়াটি বিশৃঙ্খল অবস্থার দিকে যাচ্ছে । শিক্ষা দফতরের কাছে এই ত্রুটিপূর্ণ পোর্টালটির সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি ৷ তিনি বলেন, "দয়া করে সরকারের ঘোষিত এই প্রক্রিয়াটিকে কোর্টের দরজায় নিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে না শিক্ষা দফতর । অতি দ্রুত এ ব্যাপারে সমস্ত অস্বচ্ছতা দূর করে স্পষ্ট নির্দেশিকা ঘোষণা করা হোক ।"

এছাড়াও নিয়মানুযায়ী 10 শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন । এতে শিক্ষকদের সামান্য অংশ সুযোগ পাবেন । জুনিয়র হাই স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলির সুযোগ পাবেন না । নির্দিষ্ট কোনও বিদ্যালয়ে কোনও বিষয়ে একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা থাকলে সেই স্কুলে অন্য শিক্ষকের বদলি পাওয়া কঠিন হতে পারে । ফলে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা আবেদনের সুযোগ পাবেন না ।

এই বিষয়ে ডায়মন্ডহারবারের মশাট গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা সঞ্চিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, "উৎসশ্রী পোর্টালের তালিকায় অনেক স্কুলের নাম রয়েছে ৷ সেখানে চেক ভ্য়াকান্সি বিভাগে শূন্য পদের সংখ্যা 1 দেখাচ্ছে ৷ গুগল থেকে সেই স্কুলের প্রধানশিক্ষকের নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন করে জানতে পারছি যে সেখানে কোনও শূন্য পদ নেই ৷" এছাড়া তিনি যে দিন আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন তার একমাস পরে কেউ ওই এক স্কুলে যাওয়ার আবেদন জানালে সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷ কারণ এই পোর্টালে আবেদন করার কোনও শেষ তারিখ বা ডেডলাইনের উল্লেখ নেই । তাই নির্দিষ্ট কোনও স্কুলে কোনও বিষয়ে একজন একমাস আগে আবেদন করলে একমাস পরে যখন আরেকজন আবেদন করছেন, তখনও সেই পদটি শূন্য রয়েছে কি না, তা জানার কোনও উপায় নেই পোর্টালে ।

অসম্পূর্ণ, ত্রুটিযুক্ত উৎসশ্রী পোর্টালে আবেদনে সমস্যার কথা জানালেন শিক্ষিকা সঞ্চিতা

আরও পড়ুন : Calcutta University : সেমেস্টার-সহ বকেয়া ফি মকুব করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষিকা সঞ্চিতার আরেকটি অনুরোধ 10% ছাড়ের কথা থাকলেও বিশেষ কিছু সমস্যা থাকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৷ সেই সমস্যাগুলিকে এই শতাংশ থেকে বাদ দেওয়া উচিত ৷ অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা অসুস্থতার কারণে বা স্কুল থেকে বাড়ির দূরত্বের কারণে সমস্যায় পড়েন ৷ তাঁদের এই ট্রান্সফার বেশি দরকার ৷ এই করোনা পরিস্থিতিতে দূরবর্তী স্কুলে অনেকগুলি যানবাহনে যাতায়াত করা মুশকিল ৷ কারণ স্কুলগুলিতে ওই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা পড়তে এলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দূর-দূরান্ত থেকে আসতে হয় ৷

এছাড়াও রয়েছে একাধিক অভিযোগ । নিজের জেলায় বদলির কথা বলা হলেও সেই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি । এ নিয়ে কমিশনার অফ স্কুল অনিন্দ্য নারায়ণ বিশ্বাসের সঙ্গে ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি ।

কলকাতা, 28 অগস্ট : শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির অনলাইন আবেদন জানানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দফতর 'উৎসশ্রী' পোর্টাল চালু করেছে 31 জুলাই ৷ শিক্ষক-শিক্ষিকারা আশা করেছিলেন এর মাধ্যমে সহজ প্রক্রিয়ায় বদলির আবেদন জানাতে পারবেন তাঁরা ৷ বাস্তবে তেমনটা হল না বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৷

পোর্টালে বদলির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় ২ অগস্ট থেকে । তাঁদের অভিযোগ পোর্টালটি অসম্পূর্ণ ৷ আবেদনের নিয়মকানুন বিষয়ে একাধিক জটিলতা ও ধোঁয়াশা রয়েছে । এমনকি শিক্ষা দফতরের থেকে তাঁদের কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি বা কী ভাবে এখানে আবেদন করতে হবে, তার নিয়মাবলিও প্রকাশ করা হয়নি । এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৷

31 জুলাই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও এতদিন পর্যন্ত ছিল 2015-র "দ্য ক্যালকাটা গেজেট"-এর সরকারি নোটিফিকেশনের প্রক্রিয়া অনুযায়ী কাজ চলছিল ৷ এ নিয়ে শিক্ষামহলে জোর তরজার সৃষ্টি হয় । 26 অগস্ট পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দফতর একটি নোটিস প্রকাশ করেছে । মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির অনিমেষ হালদার বলেন, "এতদিন পরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল ৷ এখন এই পদ্ধতিতে বেশ কয়েকজন এসএসসির সুপারিশপত্র পেয়ে গিয়েছেন । পোর্টালটিতে বেশ কিছু বিষয়ে চূড়ান্ত বিতর্ক এবং সমস্যা দেখা দিয়েছে । এতে সমস্যায় পড়েছেন আবেদনকারী, বিদ্যালয় প্রধান থেকে ডিআই অফিস পর্যন্ত সবাই । কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তিতে সেই জটিলতাগুলো নিরসনের সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হল না ৷ এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।"

2015-য় প্রকাশিত দ্য ক্যালকাটা গেজেট
2015-য় প্রকাশিত দ্য ক্যালকাটা গেজেট

আরও পড়ুন : Visva-Bharati : উপাচার্যের আপ্তসহায়ক সহ আধিকারিকদের ঘেরাও পড়ুয়াদের, উত্তপ্ত বিশ্বভারতী

অভিযোগ উঠেছে যে সুস্পষ্ট নির্দেশিকার অভাবে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বদলি প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ-এর রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, "নির্দিষ্ট লিখিত নিয়মাবলী না থাকায় বিদ্যালয়ের প্রধানদের মধ্যে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে মতভেদ দেখা দিচ্ছে । যে যাঁর মতো নিয়ম বানিয়ে কাজ করছেন ।" তিনি জানিয়েছেন বহু ক্ষেত্রে বিদ্যালয় প্রধান সুস্পষ্ট নির্দেশিকার অভাবের কারণে শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের ট্রানস্ফার প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে কার্যকর করছেন না । তাই প্রক্রিয়াটি বিশৃঙ্খল অবস্থার দিকে যাচ্ছে । শিক্ষা দফতরের কাছে এই ত্রুটিপূর্ণ পোর্টালটির সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি ৷ তিনি বলেন, "দয়া করে সরকারের ঘোষিত এই প্রক্রিয়াটিকে কোর্টের দরজায় নিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে না শিক্ষা দফতর । অতি দ্রুত এ ব্যাপারে সমস্ত অস্বচ্ছতা দূর করে স্পষ্ট নির্দেশিকা ঘোষণা করা হোক ।"

এছাড়াও নিয়মানুযায়ী 10 শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন । এতে শিক্ষকদের সামান্য অংশ সুযোগ পাবেন । জুনিয়র হাই স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলির সুযোগ পাবেন না । নির্দিষ্ট কোনও বিদ্যালয়ে কোনও বিষয়ে একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা থাকলে সেই স্কুলে অন্য শিক্ষকের বদলি পাওয়া কঠিন হতে পারে । ফলে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা আবেদনের সুযোগ পাবেন না ।

এই বিষয়ে ডায়মন্ডহারবারের মশাট গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা সঞ্চিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, "উৎসশ্রী পোর্টালের তালিকায় অনেক স্কুলের নাম রয়েছে ৷ সেখানে চেক ভ্য়াকান্সি বিভাগে শূন্য পদের সংখ্যা 1 দেখাচ্ছে ৷ গুগল থেকে সেই স্কুলের প্রধানশিক্ষকের নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন করে জানতে পারছি যে সেখানে কোনও শূন্য পদ নেই ৷" এছাড়া তিনি যে দিন আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন তার একমাস পরে কেউ ওই এক স্কুলে যাওয়ার আবেদন জানালে সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷ কারণ এই পোর্টালে আবেদন করার কোনও শেষ তারিখ বা ডেডলাইনের উল্লেখ নেই । তাই নির্দিষ্ট কোনও স্কুলে কোনও বিষয়ে একজন একমাস আগে আবেদন করলে একমাস পরে যখন আরেকজন আবেদন করছেন, তখনও সেই পদটি শূন্য রয়েছে কি না, তা জানার কোনও উপায় নেই পোর্টালে ।

অসম্পূর্ণ, ত্রুটিযুক্ত উৎসশ্রী পোর্টালে আবেদনে সমস্যার কথা জানালেন শিক্ষিকা সঞ্চিতা

আরও পড়ুন : Calcutta University : সেমেস্টার-সহ বকেয়া ফি মকুব করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষিকা সঞ্চিতার আরেকটি অনুরোধ 10% ছাড়ের কথা থাকলেও বিশেষ কিছু সমস্যা থাকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৷ সেই সমস্যাগুলিকে এই শতাংশ থেকে বাদ দেওয়া উচিত ৷ অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা অসুস্থতার কারণে বা স্কুল থেকে বাড়ির দূরত্বের কারণে সমস্যায় পড়েন ৷ তাঁদের এই ট্রান্সফার বেশি দরকার ৷ এই করোনা পরিস্থিতিতে দূরবর্তী স্কুলে অনেকগুলি যানবাহনে যাতায়াত করা মুশকিল ৷ কারণ স্কুলগুলিতে ওই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা পড়তে এলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দূর-দূরান্ত থেকে আসতে হয় ৷

এছাড়াও রয়েছে একাধিক অভিযোগ । নিজের জেলায় বদলির কথা বলা হলেও সেই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি । এ নিয়ে কমিশনার অফ স্কুল অনিন্দ্য নারায়ণ বিশ্বাসের সঙ্গে ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.