কলকাতা, 17 ডিসেম্বর: অহিংস পদ্ধতিতে প্রতিবাদ জানানোর বার্তা দিতে এগিয়ে এলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীরা । আজ তাঁরা পার্ক সার্কাসে আলিয়ার প্রধান ক্যাম্পাস থেকে মিছিল করেন লেডিস পার্ক পর্যন্ত । মিছিল থেকে তাঁরা অহিংস পদ্ধতিতে দুই আইনের বিরোধীতা করার আহ্বান জানান ৷ রাস্তার একধারে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানান CAA, NRC-এর ৷ মিছিল থেকে জামিয়া মিলিয়া ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের প্রতি সংহতিও জানান তাঁরা ।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে পড়ুয়াদের উপর পুলিশি আক্রমণ ও আলিগড় ইউনিভার্সিটির পড়ুয়াদের উপর পুলিশের আক্রমণের ঘটনার দিনই মধ্যরাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতিবাদ মিছিল করেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা । তারপরের দিনও পার্ক সার্কাস থেকে প্রতিবাদ মিছিল করেন তাঁরা । আজ পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতিবাদে সামিল হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীরা । আজ দুপুর দেড়টা নাগাদ ক্যাম্পাস থেকে একটি লাইন করে লেডিস পার্ক পর্যন্ত মিছিল করেন ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মচারীরা । মিছিলে স্লোগান দেওয়া হয়নি । তাঁদের হাতে ছিল দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড । 'No NRC, No CAA', 'জাতীয়তাবাদ বজায় থাক', 'সাম্প্রদায়িকতা নিপাত যাক', লেখা ছিল প্ল্যাকার্ড । অনেকের হাতে ছিল মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি । ছিল ভারতের জাতীয় পতাকাও । সবমিলিয়ে CAA, NRC-র বিরোধিতা করলেও তা শান্তিপূর্ণভাবে করার বার্তা দেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া-শিক্ষকরা ।
মিছিল থেকে মোট চারটি দাবি তোলা হয় । সেই দাবিগুলি নিয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ডঃ তাজুদ্দিন আহমেদ বলেন, "নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আমরা সম্পূর্ণভাবে সংবিধানবিরোধী বলেই মনে করছি । এতে একটি বিশেষ মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে । আমরাও সেই প্রতিবাদে শামিল হয়েছি ।" এছাড়াও NRC নিয়ে সারা দেশে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তারও প্রতিবাদ জানানো হয় মিছিল থেকে ৷ এছাড়াও অহিংস পথে, শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার কথা বলেন তিনি ৷ তিনি আরও বলেন, "আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ও জামিয়া মিলিয়াতে যে পুলিশি বর্বরতা আমরা দেখতে পেয়েছি সেটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ৷ গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক । আমরা তারও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।" সহমত পোষণ করেছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালেয়র ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রীও ৷ ছাত্রী রিফাত বলেন, " আমরা সবাই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধী । এটা আমাদের সংবিধান বিরোধী ৷ একটা নির্দিষ্ট কমিউনিটিকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে । এর বিরুদ্ধে সবাই মিলে একসঙ্গে হাত ধরে আমরা মানববন্ধন করছি । আমরা কঠোরভাবে জামিয়া মিলিয়া ও আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির পড়ুয়াদের উপর আক্রমণেরও নিন্দা করছি ৷
লেডিস পার্ক থেকে আবার মিছিল করে ক্যাম্পাসে ফিরে যান অংশগ্রহণকারীরা । সেখানে জমায়েত করে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করেন তাঁরা । গাওয়া হয় জাতীয় সংগীতও । এরপরে সকলে মিলে শপথ নেন তাঁরা ৷