কলকাতা , 1 অক্টোবর : কোরোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে সংকটের মধ্যে পড়েছিল বাংলার মিষ্টি শিল্প । ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া-র (FSSAI) তরফে একটি নির্দেশিকা জারির পর ফের সমস্যায় পড়েছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা । FSSAI যে নির্দেশিকা জারি করেছে তাতে বলা হয়েছে মিষ্টি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে মিষ্টি উৎপাদনের তারিখ ও তা কতদিন পর্যন্ত খাওয়ার উপযুক্ত থাকবে তা উল্লেখ করতে হবে । দোকানে মিষ্টি রাখার সময় লেবেলে তা লিখে দিতে হবে । রাজ্যের সমস্ত মিষ্টির দোকানের মালিককে এই নির্দেশিকা মানতে বলা হয়েছে ।
কলকাতায় প্রায় কুড়ি হাজার মিষ্টির দোকান রয়েছে । রাজ্যে প্রায় 1 লাখ 5 হাজার মিষ্টির দোকান রয়েছে । শুধু কলকাতাতে মিষ্টির মালিক ও কর্মচারী মিলিয়ে সংখ্যাটা আড়াই লাখের বেশি । এবং রাজ্যে এই শিল্পের সঙ্গে 20 লাখের বেশি মানুষ জড়িয়ে আছে । পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবীন্দ্র কুমার পাল জানিয়েছেন , কোরোনার সংক্রমণের জেরে এমনিতেই আর্থিক মন্দা চলছে মিষ্টি শিল্পে । এরপর কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা বাংলার মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে । শুধু কলকাতাতেই ছোটো ছোটো এমন দোকান রয়েছে, যারা মিষ্টির উৎপাদনের দিন ও খাওয়ার উপযুক্ত সময়সীমা প্রতিদিন লেবেলিং করতে পারবে না । আধুনিক পদ্ধতিতে কম্পিউটারে প্রিন্ট আউট বের করে সব মিষ্টির দামের পাশে কতদিন পর্যন্ত মিষ্টি খাওয়ার উপযুক্ত থাকবে তা নিয়মিতভাবে লাগাতে পারবে না অনেকেই । কলকাতায় যে সব নামীদামি মিষ্টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও তা নিয়মিত করা সম্ভব হবে না । কারণ কোনও বড় মিষ্টির দোকানে প্রতিদিন 100 রকমের মিষ্টি তৈরি হলে তাদের প্রতিদিন 100টি লেবেল তৈরি করতে হবে, যা সম্ভব নয় ।
এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী সহ ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরে আবেদন জানিয়েছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা । ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়া (FSSAI) একটি নির্দেশিকা জারি করেছে । নির্দেশিকায় বলা হয়েছে , প্রত্যেকটি মিষ্টির দোকানে মিষ্টির দামের পাশেই লেবেল করে ক্রেতাদের জানাতে হবে তা কত তারিখে তৈরি হয়েছে এবং কতদিন পর্যন্ত তা খাওয়ার উপযুক্ত । এই নিয়ে বিক্রেতারা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে । রাজ্যে এই নিয়ম আদৌ চালু করা হবে কি না তা নিয়ে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি । পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুরো বিষয়টি জানানো হবে । তিনি এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ।