কলকাতা, 24 মে: অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক এবং আলোচনা শেষে নবান্নে বসে দুই মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের পরই তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ সরাসরি শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, নবান্ন রাজ্য সচিবালয় ৷ কিন্তু সেটাকে কার্যত তৃণমূলের পার্টি অফিস হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা ৷ যদিও শুভেন্দুর পালটা দিতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেসও ৷ অমিত শাহের সরকারি দফতরে শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ৷
কেজরিওয়াল এবং ভগবন্ত মানের সঙ্গে বুধবার বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ আর সেই বৈঠকের নির্যাস বলতে গিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রীতিমতো আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে একের পর এক তির ছোড়েন মমতা ৷ দিল্লি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পালটা কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মমতা ৷ এই ইস্যুতে তৃণমূল যে আপের পাশেই দাঁড়াচ্ছে তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি ৷ এরই পাশাপাশি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেও ওইদিন তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ এমনকী কেন্দ্রের সরকারের মেয়াদ আর ছয় মাস বলেও নির্দিষ্ট করে দেন তিনি ৷ আর সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ নবান্নে বসে দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে বলেও টুইটে অভিযোগ করেন তিনি ৷ যদিও শুভেন্দুকে পালটা টুইটে বিঁধেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ৷
টুইট যুদ্ধের শুরুতে শুভেন্দু লেখেন, "নবান্ন রাজ্যের প্রধান সচিবালয়, তৃণমূল দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সচিবালয়কে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের জন্য সচিবালয়কে ব্যবহার করেছেন ৷" এরই সঙ্গে শুভেন্দুর আরও অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও এই রাজনৈতিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ৷ সমালোচকদের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতা একাধিক প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন ৷ তাঁর মতে, রাজ্য সচিবালয়ে মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠক করলেও অর্ডার অফ বিজনেস কী ছিল, তা জানা নেই ৷ পাশাপাশি তিনি লেখেন, "রাজ্য সরকার এবং দিল্লি সরকারের মধ্যে কোনও মউ স্বাক্ষরিত হয়েছিল? রাজ্যের শিক্ষা দফতর দিল্লির শিক্ষা দফতরকে প্রশিক্ষণ দেবে, কীভাবে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও সততার সঙ্গে পরিচালনা করতে হয়? দিল্লি সরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে তাদের মদ নীতি গ্রহণ করতে সাহায্য করবে?"
শুভেন্দু অধিকারী, নবান্নে দুই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলছেন, সেই সময়ই তার পালটা উত্তর দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ৷ টুইটে তিনি লেখেন, "বৈঠক হতেই পারে ৷ কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে কথা হওয়াটাই স্বাভাবিক।" এরপরই কুণাল পালটা প্রশ্ন তুলে লিখেছেন, "অমিত শাহের সরকারি দফতর বা সংসদের ঘরে শুভেন্দু ভারত সরকারের কোন আলোচনায় যায়? উনি কেন্দ্রের কে? বাংলাবিরোধী চক্রান্তের জন্য সরকারি দফতর ব্যবহার হয় কেন?"
আরও পড়ুন: দিল্লি সফর বাতিল, নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন না মমতা