কলকাতা, 7 অক্টোবর: কেন্দ্রীয় আবাস যোজনা প্রকল্পে লক্ষাধিক মানুষকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই পুজোর পরেই বঞ্চিতদের নিয়ে পথে নামবে বঙ্গ বিজেপি। আর সেই মিছিলে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতিকে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটার আহ্বান জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও কবে, কখন, কোথায় হবে এই মিছিল সেইসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
লক্ষাধিক মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আয়োজন করা হবে এই মহামিছিলের। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না-করে তাঁকেও চূড়ান্ত কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, "কেন্দ্রের আবাস যোজনা প্রকল্পের অন্তর্গত রাজ্যে যে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তার সঠিক বণ্টন হয়নি। লক্ষ-লক্ষ মানুষ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বাড়ি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। যারা আবাস যোজনার বাড়ি পাননি তাঁদের তালিকা অনেকেই কেন্দ্রের কাছে জমা দিয়েছে।" সেই রকমই একটি তালিকা শুভেন্দু অধিকারীও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি নিজেই।
শুভেন্দু বলেন, "আমি যে তালিকাটি জমা দিয়েছি সেখানে লক্ষ লক্ষ বঞ্চিত মানুষের নাম রয়েছে। কতজনের কথা বলব। 2021 সালে বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর মন্ত্রীকে জমা দিয়েছিলাম। আমার এই তালিকার ভিত্তিতে রাজ্যে মোট 17টি দল এসেছিল। এবং সবাই একমত যে এই প্রকল্পের আয়তায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। দরিদ্র মানুষকে বঞ্চিত করে তৃণমূলের নেতাদের বাড়ি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেককেই বেআইনিভাবে বাড়ি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।"
তিনি বলেন, "কার্বাইডে পাকানো নেতার মিথ্যে অভিযোগের পালটা জবাব দিতেই নিরঞ্জন জ্যোতি এখানে এসেছেন। এই মিথ্যে অভিযোগ দেওয়ার জন্য তৃণমূলকে প্রতিমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।" একই সঙ্গে, ধরনার নামে তৃণমূল কংগ্রেস ড্রামা করছে বলেও অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতিকে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "প্রতিমন্ত্রীকে অপবাদ দেওয়া হয়েছে তিনি নাকি পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তাই সেই কার্বাইড দিয়ে পাকানো নেতার মিথ্যে অপবাদের পালটা জবাব দিতে এসেছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি।
শুভেন্দু অধিকারী নাম না-করে এদিন জানান, এখানে গত তিনদিন ধরে একটি আঞ্চলিক দলের রাজভবনের সামনের ধরনাকে অনেকেই প্রাধান্য দিয়েছে। আর এই দলটি উত্তরবঙ্গে বানভাসিদের প্রাধান্য না দিয়ে ধরনা নিয়ে ব্যস্ত। নিরঞ্জন জ্যোতি-সহ শুভেন্দু অধিকারী দু'জনেই পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য তুলে ধরেন সবার সামনে। 2021 সাল থেকে শুরু করে করোনার সময় আনাজ এবং চাল থেকে শুরু করে ত্রাণের জন্য কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে সেই বিষয় নথি দেখানো হয়।
এরপর একটি তথ্য পেশ করা হয় বিজেপির পক্ষ থেকে যেখানে তাঁরা দাবি করেন, প্রায় এক কোটিরও বেশি ফেক জব কার্ডের নামে টাকা তোলা হয়েছে। এটা একটা বড় স্ক্যাম বলেন শুভেন্দু বাবু। 100 দিনের কাজ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলেও জানান তিনি। শুভেন্দুর দাবি, "বিজেপি সিবিআই তদন্ত চায়। ফেক জব কার্ড চিহ্নিত করার জন্য স্পেশাল অডিটেরও দাবি করে বিজেপি।
শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর পিছন থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে এইসব করেছেন। আসলে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে ইডির তলবের দিক থেকে নজর ঘোরাতেই এই ধরনা। নজর ঘোরাবার চেষ্টা করছেন তৃণমূল। তার জন্য ত্রাণ মনিটরিং না করে এই সব করছেন। এই সরকার এতটাই অসংবেদনশীল যে ত্রাণ নিয়ে কিছু না করে পরিবারকে বাঁচাবার চেষ্টা করছে। যাতে কেউ এদের পরিবারকে ছুঁতে না-পারে। বিজেপি এর তীব্র প্রতিবাদ করছে।"