কলকাতা, 11 জুন : অবশেষে যবনিকা পতন । বঙ্গীয় বিজেপি যে মহীরূহ তৈরির চেষ্টা করছে, তা বেড়ে ওঠার আগেই ঝড়ে পড়ল মুকুল । গেরুয়া সঙ্গ ত্যাগ করলেন মুকুল রায় । বড় ধাক্কা বিজেপি শিবিরে । সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ছিলেন মুকুল । আজ সকাল থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার একাধিকবার চেষ্টা করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব । কিন্তু সাড়া দেননি মুকুল । অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে ...
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার যে ট্রেন্ড দেখা গিয়েছিল বিধানসভা ভোটের আগে, তা উনিশের লোকসভা ভোটের সময় সেই অর্থে ট্রেন্ড ছিল না । মুকুল রায়ই প্রথম তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন । তারপর একে একে অনেক নেতাই গিয়েছেন তাঁর পিছু পিছু ।
শোনা যায়, উনিশে লোকসভা ভোটে বিজেপি যে বাংলায় ঝড়ের গতিতে নিজেদের আসন বাড়িয়েছিল, তার নেপথ্য ছিলেন মুকুল রায় । তাই হয়ত আজ সকালে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারবার তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল । কিন্তু উল্টোপথে হেঁটে কিছুটা হলেও নির্বিকার ছিল বঙ্গীয় বিজেপি । ভাবটা কিছুটা এরকম -- মুকুল রায় থাকলেন, কি চলে গেলেন... তাতে যেন কিছুই যায় আসে না দিলীপবাবুদের ।
আরও পড়ুন : পাখির চোখ 2024, তাওয়া গরম থাকতেই বিজেপিকে আঘাতের রণকৌশল মমতার
এই অবহেলার কারণ কি তবে শুভেন্দু অধিকারী ? বর্তমানে বঙ্গীয় বিজেপি শুভেন্দুতেই মজে রয়েছে । দায়িত্বও দেওয়া হচ্ছে । ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদি, জে পি নাড্ডা, অমিত শাহদের পর রাজ্যস্তরের যে মুখটি বিজেপি সবথেকে বেশি প্রজেক্ট করেছিল, তা শুভেন্দুর । রোড শোয়ে শুভেন্দু । জনসভায় শুভেন্দু । পোস্টারে শুভেন্দু ।
ভোটের পরও তা অব্যাহত । বিধানসভার বিরোধী দলনেতার পদে বসানো হয়েছে । দিল্লিতে উড়ে যাচ্ছেন । অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদিদের সঙ্গে কথা বলে আসছেন রাজ্যের ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে । সেখানে মুকুল রায়ে বিজেপি ত্যাগ করায় আদতে শুভেন্দু অধিকারীর জন্য মাঠ আরও ফাঁকা হয়ে যাওয়া বলেই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির বিশ্লেষকরা । এখন বঙ্গীয় বিজেপির ভরকেন্দ্রে শুধুই শুভেন্দু অধিকারী ।
মুকুল রায় সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে থেকে গেলে, হয়ত দিল্লির রাজনীতিতে শুভেন্দুর আনাগোনা এতটা সহজ হত না । যতই হোক, বিজেপি একটি সাংগঠনিক দল । সেদিক থেকে জেপি নাড্ডার পরই দলে যাঁদের সর্বোচ্চ পদ, তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন মুকুল রায় । এখন মুকুল রায় সরে যাওয়ায় বঙ্গীয় বিজেপিতে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করতে পারেন শুভেন্দু।