কলকাতা, 4 ডিসেম্বর: 2015 ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে তৈরি হওয়া দূষণ কমাতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল । কিন্তু গত সাত বছরে রাজ্যে একটিও কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সালফার ডাই-অক্সাইডের (এসও2) মতো গ্যাস অপসারণ করার প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়নি (Power plants not proactive in curbing pollution)। এই ঘটনা সামনে এসেছে একটি সমীক্ষা রিপোর্টে । বর্তমান সময় নানা ক্ষেত্রে দূষণ নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞ থেকে পরিবেশ প্রেমীরা। দূষণের প্রভাব সাধারণ মানুষ সরাসরি টের পাচ্ছেন । আর সেই সময় দাড়িয়ে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার এমন উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
রিপোর্ট অনুসারে, কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত হয় সালফার ডাই-অক্সাইড(এসও2) ও নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও2)। পারদের মতো দূষিত পদার্থের অপসারণ দ্রুত করার জন্য ও সূক্ষ্মতর ধূলিকণা আটকাতে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি সেই অর্থে । তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে জলের প্রয়োগ নির্ধারিত করার লক্ষে ভারতের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য সর্বোপ্রথম 2015 সালের ডিসেম্বরে দূষণ নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা নিয়ে আসা হয় । যেহেতু রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপরেই অনেকটাই নির্ভরশীল, তাই পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বাস্থ্যের উপর কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তৈরি হওয়া দূষণের প্রভাব দিনে দিনে বাড়ছে ।
রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মধ্যে 40 শতাংশ এখনও পর্যন্ত এফজিডি প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নিয়ে উঠতে পারেনি বলে রিপোর্টে বলে হয়েছে । যার অর্থ হল, উৎসস্থলে দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য এখনও পর্যন্ত কোনওরকম উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি ৷ এমনটাই দাবি সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি এন্ড ক্লিনএয়ার (CREA) এর করা একটি রিপোর্টে । শুধুমাত্র তাই নয়, বাকি 60 শতাংশ উৎপাদন ইউনিটও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দূষণ অপসারণ প্রযুক্তির প্রয়োগ করে উঠতে পারেনি । নির্ধারিত সময়সীমা গত সাত বছরে তিনবার পিছনো হয়েছে ।
আরও পড়ুন: উনুনের কালো ধোঁয়ার ‘বিষাক্ত চুম্বন‘ শহরের বাতাসে
পরিবেশ কর্মীরা জানান, কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির দূষণ শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকে না ৷ বরং বাতাসের মাধ্যমে এই দূষণ বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় । এই দূষিত বাতাস সকলের স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে । বিশেষত শিশু, বয়স্ক এবং গর্ভবতীদের জন্য এই দূষণ ভীষণভাবে ক্ষতিকারক ।