কলকাতা, 24 এপ্রিল: একজন বিচারপতি কি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন ? গত কয়েকমাসে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে এই প্রশ্ন বারবার ফিরে এসেছে বাংলার বিভিন্ন মাধ্যমে ৷ এবার সেই প্রশ্নই তোলা হল দেশের সর্বোচ্চ আদালতে ৷ সূত্রের খবর, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলার শুনানিতে এই প্রশ্ন ওঠে ৷ তার পর এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে হলফনামা তলব করা হয়েছে ৷
ওই সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে কুন্তল ঘোষের চিঠি নিয়ে দায়ের করা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলার শুনানি হয় ৷ সেখানেই অভিষেকের আইনজীবীর তরফে অভিযোগ করা হয়, একদিকে যখন হাইকোর্টে নিয়োগ দুর্নীতির শুনানি করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, অন্যদিকে একই বিষয় নিয়ে তিনি সাক্ষাৎকারও দিচ্ছেন ৷
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযোগ শোনার পর বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ৷ তিনি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এই নিয়ে নির্দেশ দেন ৷ আগামী শুক্রবারের মধ্যে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সাক্ষাৎকারের ফুটেজ-সহ বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি ৷
প্রসঙ্গত, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে বহুবার সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ তারা এই নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে ৷ তাই সোমবার তৃণমূলের তরফেই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্য়মে জানানো হয় ৷ এই নিয়ে টুইট করেন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ৷ প্রথম টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘বিচারপতি গাঙ্গুলি কি টিভিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ? হাইকোর্টের রেজিষ্ট্রারকে জানাতে বলল সুপ্রিম কোর্ট ।’’
দ্বিতীয় টুইটে কুণালের দাবি, ‘‘বিচারপতি গাঙ্গুলি কি টিভিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ? দিয়ে থাকলে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের মত আচরণ করেছেন । বলল সুপ্রিম কোর্ট । রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে । এর সঙ্গে আরও কড়া মন্তব্য করেছে সর্বোচ্চ আদালত । এই কথাই তো সবিনয়ে বলে আসছিলাম এতদিন ।’’
তৃতীয় টুইটে কুণাল ঘোষ সরাসরি নিশানা করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ৷ তৃণমূলের এই মুখপাত্র লিখেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের আজকের বক্তব্যের পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উচিত বিচারব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে সরাসরি রাজনীতি করা । বিচার চালানোর কোনও নৈতিক অধিকার তাঁর নেই ।’’
আরও পড়ুন: বিচারপতির আসনের অপব্যবহার করে রাজনীতি, কুণালের নিশানায় কি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় !