কলকাতা, 28 মে: বর্তমানে ঋতুকালীন সমস্যা নিয়ে একাধিক আলোচনা দেখা গিয়েছে। মূলত দু'টো সমস্যা বেশি করে সামনে আসে ৷ এক কারোর ক্ষেত্রে সময়ের আগেই মাসিক শুরু হয়ে যায় ৷ আবার কারোর ক্ষেত্রে মাসিক সময় মতো শুরু হয় না। এই সমস্যা বাড়তে থাকলেই হতে হয় চিকিৎসকের দ্বারস্থ ৷ বিভিন্ন টেস্টের পর জানা যায় পিসিওডি-র সমস্যা বা ওভারিতে সিস্ট রয়েছে। তবে বর্তমানে শুধুমাত্র পিসিওডি নয়, বাড়তে থাকছে পিসিওএস-এরও সমস্যা ৷ রবিবার বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্যদিবসে চিকিৎসকের কাছে থেকে জেনে নেওয়া যাক এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় ৷
গাইনোকোলজিস্ট সুনিপা চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এই দুই রোগের প্রধান কারণ হল অতিরিক্ত বাইরের খাওয়ার। এছাড়াও অন্যতম হল পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপ। এমনকি ঘুমানোর সময় যে মোবাইল ফোন আমরা দেখি সেটাও কিন্তু এক প্রকারের পিসিওডি এবং পিসিওএস হওয়ার প্রধান কারণ। ঘুমের আগে মোবাইল ফোন দেখলে তার আলোর বিকিরণের প্রভাব আমাদের চোখে পড়ে ৷ তার ফলে ঘুমানোর সময় আমরা ব্রেনকে একদম শান্ত করে রাখতে পারি না। তাই আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ঠিক এই কারণে, নয় থেকে দশ বছরের বাচ্চারাও এই সমস্ত রোগে আক্রান্ত।পাশাপাশি একই কারণে তৈরি হয় থাইরয়েডের মতো সমস্যা ৷"
এই সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ওয়াই জেনরেশন মহিলাদের ধূমপানের অভ্যাস ৷ বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ধূমপান বেশি করে। তবে এই ধূমপান মেয়েদের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক বলেই বারবার জানান চিকিৎসকরা। কোনও গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে এই ধূমপান তাঁর গর্ভে থাকা শিশুরও বিপদ ডেকে আনে। কিন্তু পিসিওডি ও পিসিওএস এই দুটো রোগের ক্ষেত্রে সমান ভাবে দায়ী থাকে এই ধূমপান বলেই জানান চিকিৎসক সুনিপা চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, "ধূমপান সকলের জন্য খারাপ ৷ তবে মেয়েদের জন্য এটা আরও খারাপ।"
এই সমস্ত সমস্যা থেকে রেহাই পেতে বর্তমানে ওষুধ খাওয়ার একটা প্রবণতাও দেখা যায়। পেটে ব্যথার জন্য বহু মেয়ে বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে থাকেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ বিপদ ডেকে আনে বলেই জানান তিনি। চিকিৎসক সুনিপা চট্টোপাধ্যায়ের মতে, যদি পেটে ব্যথা হয় অবশ্যই ওষুধ খাওয়া দরকার কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ৷ যদি কারোর গরম জলেও পেটে ব্যাথা না কমে তবে সেই ক্ষেত্রে অন্য রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৷ তাই অযথা ওষুধ না খেয়ে যদি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া যায় তাহলে সেই রোগের চিকিৎসা হওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন: থাইরয়েড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তিলোত্তমায়, বলছে পৌরনিগম
সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে চিকিৎসক জানিয়েছেন, রোজ ব্যায়াম না করলেও সবথেকে ভালো উপায় হল হাঁটা। খাবারের তালিকায় রাখা উচিত টক দই ৷ দরকার পর্যাপ্ত ঘুম ৷ অতিরিক্ত বাইরের খাওয়া বন্ধ করাটাও জরুরি ৷