কলকাতা, 29 অগস্ট: পশ্চিমবঙ্গ দিবসের দিন ঘোষণা নিয়ে মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা সর্বদল বৈঠকে যোগ দিল না বিজেপি ৷ রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ নিয়ে তাঁর দলের অবস্থান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি দিয়েছেন ৷ সেখানে সুকান্ত জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব নির্ধারিত কিছু সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়ার জন্য ডাকা বৈঠকে তিনি বা তাঁর দলের কোনও সদস্য় উপস্থিত থাকবেন না ৷ পাশাপাশি, বিজেপি যে 20 জুন তারিখটিকেই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে মানে তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি ৷
সুকান্ত মজুমদারের লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণপত্রের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদটিকে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ যেখানে বলা হয়েছিল, ‘‘কোনও 20 জুন তারিখে পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে আমরা কোথাও কিছু পড়িনি বা শুনিনি ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক একতরফা সিদ্ধান্তটি বিস্ময়জনক ও উদ্বেগজনক ৷’’ আর মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া সর্বদলের আমন্ত্রণপত্রের এই অংশে আপত্তি রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের ৷
সুকান্ত তাঁর চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, ‘‘আপনার এই বক্তব্য স্পষ্ট, পশ্চিমবঙ্গ দিবস সম্পর্কে খোলা মন নিয়ে আপনি আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেননি ৷’’ সুকান্তর আরও অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর আগে থেকে নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত এবং পূর্ব কিছু পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করাই আসল উদ্দেশ্য ৷ আর সেটা করতে ঢাল হিসেবে সর্বদল বৈঠককে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ বিজেপির অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর আগে থেকে নেওয়া সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিতে রাজ্য বিজেপির সভাপতি বা তাঁর দলের কোনও প্রতিনিধি সর্বদল বৈঠকে যাবেন না ৷
আরও পড়ুন: ' শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় না থাকলে পশ্চিমবঙ্গ সৃষ্টি হত না,' মত সুকান্তর
এই চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে বিজেপি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ৷ সুকান্ত জানিয়েছেন, বাঙালি হিন্দুদের মাতৃভূমি পশ্চিমবঙ্গ ৷ যা 1947 সালের 20 জুন স্থাপিত হয়েছিল ৷ ওই দিনেই বঙ্গীয় আইনসভা এবং তা নিয়ে ভোটাভুটিতে সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছিল বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন সুকান্ত ৷ বিজেপি অভিযোগ করেছে, বাঙালি হিন্দুর ন্যায্য দাবি নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মনের দরজা বন্ধ করে রেখেছেন ৷ উল্লেখ্য, সম্প্রতি উত্তর কলকাতায় বিজেপির জন সম্পর্ক যাত্রাতেও সুকান্ত 20 জুন কেন পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালিত হবে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন ৷
পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে রাজ্য সরকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠক প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘এই চিঠির অ্যাজেন্ডা মারাত্মক ৷ কেন্দ্র বিরোধী, রাজ্যপাল বিরোধী চিঠি। এইরকম চিঠি লিখে সেখানে সর্বদলীয় বৈঠক আর বিজেপি সেখানে যাবে, আশা করে কী করে ? আমি ধন্যবাদ জানাব পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বিরোধী দলকে ৷ কারণ, সকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাবকে ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছেন ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেভাবে ভোট লুট করেছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও ভদ্রলোক বা গণতন্ত্র প্রিয় লোক বসতে পারেন না ৷’’ উল্লেখ্য, কংগ্রেস ও সিপিআইএম এই বৈঠকে যোগ দেয়নি ৷