কলকাতা, 6 এপ্রিল: আদালতের নির্দেশের দোহাই দিয়ে হনুমান জয়ন্তীতে ভক্তদের জন্য বাধার সৃষ্টি করছে পুলিশ ৷ অভিযোগ, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ৷ আজ একদিকে সারা দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে হনুমান জয়ন্তী আর অন্যদিকে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা পালন করছেন দলের 44তম প্রতিষ্ঠা দিবস । সেই উপলক্ষে বঙ্গ বিজেপির প্রধান কার্যালয়ে আজ পতাকা উত্তোলন করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তখনই তিনি একহাত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ৷
হনুমান জয়ন্তীতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বসু বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজ ঘুরে দেখছেন । এই বিষয়ে সুকান্ত বলেন, রাজ্যপাল আজ নিউ টাউনে একটি মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছেন । পুজো দেওয়াটাই তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল ৷ তারপর তিনি বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেছেন । এটা ভালো লক্ষণ । কিন্তু আদালতের নির্দেশকে মেনে নিয়ে পুলিশ যে পরিমাণ বিধিনিষেধ চাপাচ্ছে, তাতে যাঁরা হনুমান জয়ন্তী পালন করছেন তাঁদের খুব অসুবিধা হচ্ছে ।
সম্প্রতি রাম নবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে হাওড়ার শিবপুরে ও হুগলির রিষড়ায় যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ধর্ম রাজনীতির হাতিয়ার হচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন অনেক আগেই ওঠা উচিত ছিল । ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয় ৷ তাহলে চোরদের সংখ্যা বাড়বে । শুধু রাজ্যে কেন, সারাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে একটা 'কিম্ভুতকিমাকার' ধারণা তৈরি হয়েছে বলে মত সুকান্তর । তাঁর অভিযোগ, সরস্বতী পুজো করতে দেওয়া হয়নি কিন্তু ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়েছে ।
তিনি আরও বলেন যে, ধর্মীয় সভা সমাবেশ আয়োজন সামাজিক সংগঠনগুলির করা উচিত। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় এই ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান না হওয়াই ভালো ৷ তবে রাজনৈতিক নেতারা এতে নিশ্চয়ই অংশগ্রহণ করতে পারেন কারণ তাঁরাও সমাজের অংশ । ধর্মের নামে সঙ সাজা উচিত না । কেউ যদি বিকেলে ইফতার পার্টিতে অংশগ্রহণ করতে যান, তাহলে তাঁর ইসলামের নিয়ম মেনেই ইফতার পার্টিতে অংশগ্রহণ করা উচিত ৷ সারাদিন খেয়ে তারপরে বিকেলে ইফতার পার্টিতে গিয়ে নিয়ম রক্ষা করার কোনও মানে হয় না ।
মহার্ঘ ভাতা নিয়ে এখনও কর্মবিরতি চলছে । এই বিষয়ে সুকান্ত বলেন যে, এই সরকার এতটাই অসংবেদনশীল যে তাদের সামনে এই আন্দোলনের কোনও গুরুত্ব নেই । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু ভোটের রাজনীতি বোঝেন । আন্দোলনরত কর্মচারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত । এই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতির দাবি, আলোচনায় বসে কোনও লাভ নেই কারণ রাজ্য সরকারের ভাঁড়ার শূন্য ৷ কোথা থেকে ভাতা দেবে ?
সুকান্ত বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে আমাদের হাসি পায় । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ যে ভাষণ দিয়েছেন তার থেকে পরিষ্কার যে, পারিবারিক রাজনীতি দেশে আর চলবে না ৷ এর পরেই কারও কারও আনন্দের সফর দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে । প্রধানমন্ত্রীর আজকের ভাষণ তাঁদের জন্য একটা বড় ধাক্কা ।"
আজ বিজেপির পার্টি অফিসে সবাই ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য শোনেন । বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে সুকান্ত মজুমদার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা এবং অন্যান্য কর্মী সমর্থকরা ।
আরও পড়ুন: হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা মমতার, অশান্তি এড়াতে সতর্ক প্রশাসন