কলকাতা, 22 নভেম্বর: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে কোমড় বেঁধেছে বঙ্গ বিজেপি শিবির । একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে বুধবার থেকে জেলা সফর শুরু করবেন রাজ্য বিজেপি সুকান্ত মজুমদার ও অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty in campaign for BJP) ৷ তার আগে মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে এই প্রসঙ্গে দলের পরিকল্পনার কথা জানান সুকান্ত মজুমদার ৷ তারই মাঝে এদিন তৃণমূলের শীর্ষস্তরে দ্বন্দ্বের কথা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেছেন সুকান্ত (sukanta majumdar criticises Mamata Banerjee and Abhishek Banerjee) ৷ তিনি বলেন,"ভাইপো কবে পিসিকে ঠেলে চেয়ারে বসবে তা নিয়ে মহারথ, দ্বৈরথ শুরু হয়ে গিয়েছে ।"
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে কোনও ঐক্য নেই, সে কারণেই মঙ্গলবার বিধানসভায় সুকান্তের যাওয়ার খবর পেয়েও সেখান থেকে বেরিয়ে যান শুভেন্দু অধিকারী ৷ এই বিষয়ে এদিন সাফাই দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার ৷ বলেছেন,"আমাদের পরিবারের মধ্যে ঐক্য আছে না নেই সেটা তাদের ভাবার প্রয়োজন নেই ৷ সবাই জানে আজ আমার বেলা একটার সময় যাওয়ার কথা ছিল বিধানসভায় ৷ কিন্তু পূর্ব রেলের জিএম-এর সঙ্গে আমার একটি বৈঠক ছিল আমি তাতে আটকে যাওয়ায় কিছুটা দেরি হয়ে যায় । শুভেন্দুবাবুর অন্য কাজ ছিল তিনি তাই বেরিয়ে গিয়েছেন । তৃণমূল নিজেদের নিয়ে ভাবুক ৷ ভাইপো কবে পিসিকে ঠেলে চেয়ারে বসবে তা নিয়ে মহারথ, দ্বৈরথ শুরু হয়ে গিয়েছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরেছেন যে এরাজ্যের হিন্দুরা ওনার প্রতি খুশি নন । তাই স্বাভাবিকভাবেই উনি বাংলায় বেনারস মডেল আনার চেষ্টা করছেন । আসলে সরকারের গঙ্গা যাত্রা হবে তাই এমন গঙ্গা গঙ্গা করছে ।"
আরও পড়ুন: বিধানসভায় সুকান্তর আসার খবর জেনেও বেরিয়ে গেলেন শুভেন্দু
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে সুকান্ত মজুমদার বলেন,"মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলে গিয়ে চপ ভাজছেন, এটা তার কাজ নয় । জল এবং ঘর, যা মানুষের মৌলিক অধিকার সেই পরিষেবাগুলি দিতে না পারায় মানুষের রোষের মুখে পড়ে তিনি পালিয়ে এসেছেন । কিন্তু উনি কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন যে, কেন্দ্র নাকি টাকা দিচ্ছে না । জল এবং বাসস্থানের মতো মৌলিক অধিকার যদি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে না পারে তাহলে সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই ৷ অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত ।"
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা প্রসঙ্গেও এদিন তৃণমূলকে বিঁধেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি (Sukanta Majumdar) ৷ তিনি বলেন,"পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসবে তত তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীরদ্বন্দ্ব বাড়বে । এখন বসিরহাটে পুলিশের হাতে পায়ে গুলি লেগেছে, এরপরে বুকে মাথায় গুলি লাগবে । রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ভয়ঙ্কর সেটা আর বলে দিতে হয় না । পুলিশকে যখন বিরোধীদের আটকাবার জন্য এবং রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয় তখন পুলিশের অবস্থা এরকমই হবে ।"
মিঠুন প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন,"মিঠুন চক্রবর্তী শুধু রাজ্যের নয় দেশের আইকন ৷ পঞ্চায়েত ভোট হয় বুথস্তরে তাই কোনও বড় জনসভা করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার করা সম্ভব নয় । তাই কর্মকর্তাদের উজ্জীবিত করার জন্য তাঁকে বুথ স্তরেই প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হবে । পাশাপাশি এখন আমাদের বিধায়ক সংখ্যাও অনেক। তাই সবাইকে নির্বাচন এবং প্রচারের কাজে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে । এদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীও রয়েছে তাই গতবার বিজেপিকে যেভাবে বাধা দেওয়া হয়েছিল এবার অত সহজে আর সেটা সম্ভব নয় ।"