কলকাতা, 23 মার্চ: নিয়োগ দুর্নীতি (Bengal Recruitment Scam) নিয়ে বাংলার রাজনীতি উত্তাল । বিরোধী আক্রমণের মুখে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) । এই অবস্থায় তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে (Education Minister Bratya Basu) বাম আমলে হওয়া চিরকুটের মাধ্যমে চাকরির তথ্য প্রকাশ্যে আনার কথা বলেছেন । এই মুহূর্তে যে দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য তোলপাড়, সেই দুর্নীতির বীজ যে বাম আমলে পোঁতা হয়েছিল, তা দেখাতেই বদ্ধপরিকর রাজ্যের শাসক দল । আর এই অবস্থায় একদা বাম পরিষদীয় দলনেতার দায়িত্ব সামলানো সুজন চক্রবর্তী স্ত্রীর নাম উঠে এল এই চিরকুটের মাধ্যমে চাকরি অভিযোগে (Job of Sujan Chakraborty Wife) ।
প্রসঙ্গত, বুধবার এই অভিযোগ আনেন খোদ রাজ্যের সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক । এরপর বৃহস্পতিবার বাম আমলের দুর্নীতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ । বাম আমলে সিপিএম নেতাদের বাড়ি বাড়িতে কীভাবে সরকারি চাকরি হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি । একই সঙ্গে প্রাক্তন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর মিলি চক্রবর্তীর ডকুমেন্টস প্রকাশ করে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রশ্ন তোলে, কোন পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন উনি ?
উল্লেখ্য, 1987 সাল থেকে 2021 সাল পর্যন্ত গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে চাকরি করেছেন সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী । শেষ পর্যন্ত তাঁর বেসিক বেতন ছিল মাসিক 55 হাজার টাকা । এখন পেনশন পান ৷ এদিন সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর ডকুমেন্টস প্রকাশ করে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আমি সুজনদা বা বউদিকে আক্রমণ করার পক্ষ নই । কিন্তু যেভাবে ব্যক্তি আক্রমণ হয়েছে । যাঁরা কাদা ছুঁড়ছে, তাঁরা কাঁচের ঘরে বসে ঢিল ছুঁড়ছেন ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘পার্থ ভৌমিক যে অভিযোগ এনেছেন, সেটা নিয়ে সুজন বাবু বলেছেন, ‘আমাদের চাকরির কাগজ আছে ।’ আমরা জানতে চাই তাঁর স্ত্রী কোন প্রসেসে চাকরি পেয়েছেন ? তিনি যে পদে কাজ করতেন, তার নিয়োগ প্রক্রিয়া কী ছিল ? আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে যে কোনোরকম পরীক্ষা ছাড়া পার্টি থেকে চাকরি পাওয়া গিয়েছে । এই চিঠি আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে দিয়েছি । তিনি তদন্ত করে দেখবেন ।’’
এরপরই এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন সুজন চক্রবর্তী । তিনি বলেন, ‘‘বুঝতে পেরেছি ওদের বড্ড লেগেছে । কিন্তু আমি বুঝলাম না এই চিঠি দিয়ে ওরা কী বোঝাতে চাইল, আমার স্ত্রী তো চাকরি করতেন । নিয়মের মধ্যেই পেনশন পান । এটা তো জয়েনিং লেটার । কোনও সুপারিশপত্র তো নয় । তৃণমূল একটু হোমওয়ার্ক করুক ।’’
প্রসঙ্গত, এদিন দিনভর সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি নিয়ে উত্তাল থাকল রাজ্য রাজনীতি । এখন প্রশ্ন, তৃণমূল কংগ্রেস যেটা চাইছে যে এসব প্রকাশ করে মানুষের কাছে প্রমাণ করতে বাম আমলেও নিয়োগের দুর্নীতি হয়েছে । মানুষ কি সেকথা বিশ্বাস করবে ? আদালত কি এই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনও পদক্ষেপ করবে ! নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সিগুলি এই নেতা-নেত্রীদের ডাকবেন ! এখন কী হয় আগামীতে সেদিকেই লক্ষ্য রয়েছে রাজ্যের মানুষের ।
আরও পড়ুন: পার্থর অভিযোগকে 'বোগাস' বললেন সুজন, প্রমাণ চাইলেন দিলীপ