কলকাতা, 3 অগাস্ট : লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পর রাজ্য জুড়ে জনসংযোগ বাড়াতে 'দিদিকে বলো' কর্মসূচি শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় মন্ত্রী, বিধায়করা এই কর্মসূচির প্রচারে মদয়ানে নেমে পড়েছেন ৷ জনসংযোগ আরও বাড়াতে এবার টুইটারে 'আমার গর্ব মমতা' পেজ খুলে প্রচার শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করলেন CPI(M) নেতা সুজন চক্রবর্তী ৷ তাঁর মতে, এসব করে বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করছে রাজ্যের শাসকদল ৷ সুজনের প্রশ্ন, ''আমার গর্ব মমতা, তার মানে বাকিরা কেউ গর্বের নয়?"
এর আগে 'দিদিকে বলো' কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছিল BJP, CPI(M) সহ রাজ্যের বিরোধী দলগুলি ৷ সুজন চক্রবর্তী এই কর্মসূচি নিয়ে বলেছিলেন, গদি হারানোর ভয়ে এসব করছে তৃণমূল ৷ আর 'আমার গর্ব মমতা' নিয়ে আজ তিনি বলেন, "রাজ্যের শাসন জলাঞ্জলি দিয়ে প্রচার পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন মমতা ব্যানার্জি । সামনে নির্বাচন তাই পরাজয়ের আশঙ্কায় নিজের ঢাক নিজেই পেটাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ।"
সুজন চক্রবর্তীর আরও সংযোজন, "আমার গর্ব মমতা, তার মানে বাকিরা কেউ গর্বের নয়? তৃণমূল কংগ্রেসের বাকি লোকজনের জন্য কেউ গর্ব করবে না তার মানে তৃণমূল কংগ্রেসে একটাই পদ । বাকি সবটাই আপদ-বিপদ । TMC নেতা মন্ত্রীরা বুঝবেন, তাঁরা সব আপদ-বিপদ । শুধুমাত্র একমাত্র পদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । মমতায় গর্ব । তাই মমতার জন্য গর্বিত হওয়া প্রয়োজন তাঁদের । এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । যার জন্য তাঁর দলের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এই বার্তার মধ্যে দিয়ে কার্যত গোটা দলকে ছোটো করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । দলের সবার মাথায় বসতে চাইছেন তিনি । যেমন BJP কেউ না । কেন্দ্রীয় সরকারটা মোদির । সেই বার্তাই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও দেওয়া হচ্ছে ৷ রাজ্য সরকার মমতার ৷ তৃণমূল কেউ না ৷"\
সুজন চক্রবর্তীর আরও সংযোজন, "মুখ্যমন্ত্রী গর্বের তাই ইতিমধ্যে পুরস্কার দেওয়ার পালা শুরু হবে । 'দিদিকে বলো'র মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে পুরস্কার ঘোষণার পর্ব । BJP-র যেমন মোদি সব । তৃণমূল কংগ্রেসের তেমন মমতাই সব । মমতাই তাদের গর্ব । বিদ্যাসাগর মমতার প্রায় পায়ের তলায় স্থান পায় ৷ নেতাজির জন্মদিন 23 জানুয়ারি বদলে মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছে অনুযায়ী অন্য যে কোনও দিন করা যায় ৷ রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনও বদলানো যায় ৷ "
সুজন চক্রবর্তীর মতে, নিজেকে মনীষীদের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর কথায় "মনীষীদের ছোটো ছোটো ছবি দিয়ে কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রেখে শহরজুড়ে পোস্টার বা হোর্ডিং দেওয়া হয় ৷ তার মানে রবীন্দ্রনাথ আর মমতা ব্যানার্জি সমান? বিবেকানন্দ আর মমতা ব্যানার্জি কি সমান? আমারা কি রবীন্দ্রনাথ, প্রফুল্ল চন্দ্র, নজরুল, সুকান্তকে নিয়ে গর্ব করব না? আমাদের গর্ব কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? মুখ্যমন্ত্রীর এমন আচরণ বাংলার অতীত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে লাঞ্চিত করেছে ৷"