কলকাতা, 23 মে: বাম আমলে চিরকুটে চাকরির অভিযোগ শাসক শিবির থেকে বিজেপি, সিপিআইএমের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে । এবার সেই অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে সরব হয়েছেন সিপিএম পলিট ব্যুরোর সদস্য সুজন চক্রবর্তী। মঙ্গলবার তৃণমূল-বিজেপিকে বিঁধে পালটা শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন তিনি। শ্বেতপত্র প্রকাশ করলে তৃণমূল-বিজেপি, শুভেন্দু, মমতা সকলেই নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়বেন বলেই দাবি সুজনের ।
শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে চাকরি এবং নিয়োগের অভিযোগ ভূরি ভূরি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা বাম আমলের চিরকুটে চাকরির অভিযোগ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, আজ পর্যন্ত সঠিক তথ্য বা প্রমাণ দিতে পারেননি। এরকম পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আবার বাম আমলে চিরকুটে চাকরির তথ্য খাড়া করেছেন। দিনকয়েক আগে সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর চাকরি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল শাসকদলের তরফে। সে সময় মিলি চক্রবর্তী তো বটেই সুজন চক্রবর্তীও পালটা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে চিরকুটে চাকরির প্রমাণ চেয়েছিলেন।
যা নিয়ে হইচই পরলেও পরবর্তীতে তেমন কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি শাসক দলের তরফে। সেসবকে হাতিয়ার করেই এদিন ফের সুজন চক্রবর্তী তৃণমূল-বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, "তৃণমূলে থেকে বড় হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীরা। তৃণমূলের সুরেই কথা বলেন বিজেপিওয়ালারা। বাম আমলে চিরকুটে চাকরি হয়েছে বলে দাবি করলেও মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীরা কোনও তথ্য সামনে আনতে পারেনি। তাই এখন যখন তৃণমূলের কথা বাজারে চলছে না, তখন বিজেপির শুভেন্দুকে দিয়ে বাম আমলের চিরকুট প্রসঙ্গ ফের একবার তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীকে চ্যালেঞ্জ করে কোনও লাভ হবে না। বরং শুভেন্দু অধিকারীর উচিত মমতার কাছে পালটা প্রশ্ন করা যে, আপনি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবেন বলেছিলেন, সেগুলো কই? আর যদি কখনও শ্বেতপত্র প্রকাশ করে তাহলে বাম আমলে চিরকুটের তথ্য খাড়া করতে পারবেন না। কারণের বাস্তবতা নেই। শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে পারলে সেখানে দেখবেন বাম আমলে চাকরি মানে স্বচ্ছতা। আর তৃণমূল আমলে চাকরি মানেই, হয় মমতার হাত ধরে নয় শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে। ধরা পড়ে যাবে।"
শুভেন্দু অধিকারীদের গলায় তৃণমূলের সুর প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তীদের আরও বক্তব্য যে, তৃণমূলের ঘরেই বিজেপি রাজ্যে বেড়েছে। যুক্তি দিয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন, "বাম আমলে জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পঞ্চায়েত ভোটেও বিজেপি কোনও সিট জিততে পারত না। অথচ তৃণমূল আমলের বিজেপি এখন রাজ্যে বিরোধী দল। আরএসএস-এর নির্দেশে তৃণমূল-বিজেপি চলছে। বিজেপি কখনও চায় না তৃণমূলের খারাপ হোক। কখনও তৃণমূল চায় না বিজেপি শেষ হয়ে যাক। হলে আরএসএস-এর নির্দেশ মত শুভেন্দু অধিকারীদের গলায় তৃণমূলের সুর থাকবে এটাই স্বাভাবিক।"
আরও পড়ুন: কংগ্রেস ও সিপিএমকে পিটিয়ে কবর দেওয়ার হুঁশিয়ারি তৃণমূল নেতার
মালদার বাজি কারখানায় আগুন এর ঘটনায় একজন মৃত্যু প্রসঙ্গেও শাসক দল তৃণমূলকে কড়া সমালোচনা করেন সুজন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় জেলায় বোমা তৈরির মশলা মজুত করা হচ্ছে বলে তার অভিযোগ।