কলকাতা, 29 অগাস্ট : সুভাষচন্দ্র বসুর নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, অভিযোগ তুলল নেতাজির পরিবার ৷ গুমনামি বাবা এবং নেতাজি ভিন্ন দুই ব্যক্তি, দাবি পরিবারের ৷ তাঁর পরিবারের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থা সুভাষচন্দ্র বসুর নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে । তাঁকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে৷
গুমনামি বাবা ভারতের একটি অজ্ঞাত রহস্য, যার কোনও মীমাংসা হয়নি ৷ তিনি 1985 সালে উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে মারা যান ৷ নেতাজি গবেষক অনুজ ধর মনে করেন, গুমনামি বাবা এবং সুভাষচন্দ্র বসু একই ব্যক্তি৷ বসু পরিবারের বিবৃতিতে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে এই সংস্থাটির দিকে । 'গুমনামি বাবা' এবং সুভাষ বসু এক মানুষ হতে পারেন না, জানিয়েছেন অধ্যাপক সুগত বসু এবং প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসু । এবার এই বিষয়ে কথা বললেন চন্দ্র বসু-সহ নেতাজি কন্যা অনিতা, নেতাজির ভাইঝি চিত্রা ঘোষ, ভাইপো দ্বারকানাথ বোস, ভাইঝি রমা রায়, মমতা চৌধুরি, নিতা ঘোষ, কৃষ্ণা ঘোষ, শরৎচন্দ্র বসুর পুত্রবধূ সহ পরিবারের বহু সদস্য ।
পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি 'গুমনামি'-র ট্রেলার সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ৷ নেতাজিকে 'গুমনামি' হিসেবে দেখানো হয়েছে সেখানে ৷ এটি বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে ৷
নেতাজি পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'গুমনামি বাবা' উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় তিন দশক ধরে আত্মগোপন করেছিলেন । তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলো কেটেছে অযোধ্যার কাছে ফৈজাবাদে । এক কামরার ঘরে থাকতেন তিনি । সব সময় নিজের মুখ ঢেকে রাখতেন । 1985 সালে তাঁর মৃত্যু হয় । কোনও পরিচয় ছাড়া, কোনও পাসপোর্ট ছাড়া, এই নামহীন মানুষটাকে দেশে রাখাই ঠিক হয়নি । এই মানুষটির কোনও চেনা ছবি পাওয়া যায় না । এই লোকটিকে নিয়ে একটি বেসরকারি সংস্থা মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে । সুভাষচন্দ্র বসুর একটি ছবিকে সাজিয়ে ভুল প্রচার চালানো হচ্ছে । যেটি সর্বৈব মিথ্যা । মিথ্যে ছবিটা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । গুমনামি বাবা যে ঘরটিতে থাকতেন, সেই বাড়ির মালিক শক্তি সিং এই প্রচার চালানোর সঙ্গে যুক্ত । 2005 সালে জাস্টিস মুখার্জি কমিশন গুমনামি বাবার DNA টেস্টের পরে জানিয়েছিলেন, নেতাজি এবং গুমনামি বাবার কোনও মিল নেই । কলকাতা সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে এই টেস্ট হয়েছিল । ওই সরকারি সংস্থাতেই দু'জনের হাতের লেখাও মিলিয়ে দেখা হয় । সেখানে জমা দেওয়া হয় প্রায় একই রকম একটি হাতের লেখা । গুমনামি বাবার কাছে নেতাজির যে ছবি, ডকুমেন্ট এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র পাওয়া গেছিল, সেটি জয়শ্রী প্রকাশনের বিজয় নাগের দেওয়া । পরে তিনি সেটা স্বীকার করেছেন । সুভাষচন্দ্র বসু পরিবার চাইছে, এই প্রচার অবিলম্বে বন্ধ হোক ।"