কলকাতা, 17 অগাস্ট: যাদবপুর-কাণ্ডের পর মালদায় 2018 সালের ছাত্রীর রহস্য-মৃত্যূু ঘিরে নতুন প্রশ্ন ৷ হস্টেলের পাঁচতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় ছাত্রীর, ঘটনার নেপথ্যে ব়্যাগিং কী না, সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ যার জেরে ছাত্রীর রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ, নির্দেশ বিচারপতি সম্পা দত্ত পালের।
বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী শাশ্বত গোপাল মুখোপাধ্যায় আদালতে জানান, "নাবালিকা ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। তাই কোনও নিরপেক্ষ অথবা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের প্রয়োজন নেই। সরকারপক্ষের আইনজীবীর দাবি ছাত্রীটি মানসিক অবসাদের জন্যই আত্মহত্যা করেছিল। পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীর অভিভাবককে স্কুলে ডেকে পাঠানোর পরেই সে আত্মহত্যা করে। খুনের অভিযোগে কোন মামলাই দায়ের করা হয়নি পুলিশের কাছে।"
সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল প্রশ্ন করেন, কী কারণে অভিভাবককে স্কুলে ডাকা হয়েছিল? তাঁর তথ্য কোথায়? বিচারপতি সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশ্যে আরও জানতে চান, প্রথম চার্জশিট জমা করার সময় যে সমস্ত ব্যক্তিদের সাক্ষী নেওয়ার দরকার ছিল, তাঁদের কেন সাক্ষী নিলেন না তদন্তকারী আধিকারিকরা? সেই প্রশ্নের উত্তর এদিন আদালতে দিতে পারেনি সরকার পক্ষের আইনজীবী।
এদিন মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, তদন্তে সাক্ষীদের নাম প্রথম চার্জশিটে নেই কেন? নাবালিকা ছাত্রীর বাবা নির্দিষ্ট করে খুনের অভিযোগ করলেও সেই অভিযোগ এফআইআর হিসেবে রুজু করেনি পুলিশ বলে অভিযোগ। পাশাপাশি ওই ছাত্রী পাঁচ তলা থেকে নীচে পড়ে যাওয়ার পর হাসপাতালে প্রথম যে চিকিৎসক ছাত্রীর চিকিৎসা করেছিলেন কেন তাঁর সাক্ষী নেওয়া হয়নি? শুধু তাই নয় ঘটনার প্রায় এক দশক হতে চললেও আজ পর্যন্ত মৃত ছাত্রীর বাবার কোনও রকম জবানবন্দি নেয়নি পুলিশ। সেই পুলিশের উপরে কীভাবে আস্থা রাখবে পরিবার ? স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা তার বাবাকে জানাননি ৷ এই ঘটনার পরে অনেকক্ষণ ছাত্রী জীবিত অবস্থায় ছিল ৷ তা সত্ত্বেও তার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আইনজীবীর।
আরও পড়ুন: ছাত্রমৃত্যুর পরেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানো নিয়ে তরজা জারি
2018 সালের 30শে অক্টোবর মালদা কালিয়াচক আবাসিক মিশনের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী নাজিমা খাতুন হস্টেলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে দাবি করেছিল আবাসিক কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার কথা স্কুলেরই এক অভিভাবকের মারফত জানতে পারেন ছাত্রীর বাবা। খবর পাওয়ার পরেই মালদা চাঁচোল থেকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছয় ছাত্রীর পরিবার। ততক্ষণে চিকিৎসক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানাযন। মেয়েকে পরিকল্পনা করে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে কালিয়াচক থানায় আবাসিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মৃত ছাত্রীর পরিবার।