কলকাতা, 6 ডিসেম্বর: এবার পরিচারিকারদের জন্য মাসিক বেতন বেঁধে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। শ্রম আইনের অধিকারকে কাজে লাগিয়ে এমন পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। পরিচারিকা-পরিচারকদের পাশাপাশি অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জন্যও একই ভাবনা প্রশাসনের ।তথ্য বলছে হাজার 1948 সালের একটি শ্রম আইন আছে যার দ্বারা অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন সরকারের তরফ থেকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায় (State govt is planning to implement the new policy with the help of 1948 labor law)।
এই আইনের উপর ভিত্তি করেই গৃহ পরিচালক থেকে শুরু করে দোকানের কর্মচারী, ঠান্ডা পানীয় উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, বিস্কুট কারখানার শ্রমিক, ইলেকট্রনিক্স, গাড়ি যন্ত্রাংশ বিপণনের ও প্রচারের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদেরও ন্যূনতম মজুরি নির্দিষ্ট করে দিতে চায় নবান্ন। গত 22 নভেম্বর রাজ্য শ্রম দফতরের থেকে একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে মিলেছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের অনুমোদনও। কাজেই এই পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপাতত কোনও অসুবিধা নেই।
আরও পড়ুন: শীতের আগমনীতে নিম্নচাপের কাঁটা, ঠান্ডার আমেজ উত্তরবঙ্গে
প্রশ্ন উঠতেই পারে হঠাৎ করে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এর পেছনে কি কোনো রাজনৈতিক সমীকরণ রয়েছে? তথ্য বলছে অবশ্যই এই ধরনের পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে সুপরিকল্পিত ভাবনা-চিন্তা । রাজনৈতিক মহল বলছে এর পেছনে রয়েছে ভোট অঙ্কও। আসলে অসংগঠিত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বেতন নির্দিষ্ট করে দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিনের। রাজ্যে এই অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এই মুহূর্তে যদি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য আইন করে ন্যূনতম বেতন নির্দিষ্ট করতে পারে রাজ্য সরকার তাহলে ভোট বাক্সে তার লাভ রাজ্যের শাসক দল পেতে পারে। খুব স্বাভাবিকভাবেই সে কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। আর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে পরিচালক পরিচালিকাদের কথা বলা হচ্ছে খাতায়-কলমে তাদের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এই মুহূর্তে রাজ্যে সব মিলিয়ে প্রায় 50 লক্ষ মহিলা ও পুরুষ গৃহ পরিচারিকা ও পরিচারক হিসাবে কাজ করেন। এর মধ্যে 30 লক্ষ মহিলা ও 20 লক্ষ পুরুষ। কাজেই এঁদের জন্য যদি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ রাজ্যের সরকার নিতে পারে তার লাভ অবশ্যই ভোট বাক্সে পেতে পারে রাজ্যের শাসক দল।