কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর : ধুমধাম করে নেতাজি ইন্ডোরে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান করেছে রাজ্য সরকার ৷ অথচ তাতে না কি ডাক পায়নি রাজ্যের অনেক শিক্ষক সংগঠন ৷ আমন্ত্রিত ছিলেন শুধুমাত্র শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা ৷ এমনই অভিযোগ বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনগুলির ৷ যদিও তা মানতে চায়নি তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ৷
শিক্ষক দিবসে সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়ে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলাম বলেন, "সরকারের তরফে কোনও আমন্ত্রণ পাইনি ৷
শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনকে শুধু আমন্ত্রণ করা হয়েছে । আমরা আশা করেছিলাম, সরকার সব শিক্ষক সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানাবে । সরকার এবং শাসক দল যে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে এটাই তার প্রমাণ । 'শিক্ষক দিবসেও আমরা-ওরা' করছে । এর তীব্র প্রতিবাদ করছি আমরা । " তাঁর দাবি, তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের ক্ষেত্রে ব্লকপিছু 20টি করে পাস দেওয়া হয়েছিল ৷ তাঁর কথায়, "শিক্ষক দিবসটা তো কোনও একটা দলের বিষয় নয় । এটা সার্বিক বিষয় । সারা বছর এই দিনটার জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি । " তাঁরাও কোনও আমন্ত্রণ পায়নি বলে জানান নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি কলকাতা জেলা কমিটির সেক্রেটারি প্রিয় নিয়োগী ৷ তাঁর দাবি, "অনুষ্ঠানে শুধু শাসকদল ছিল । আর সব বিরোধী দলের শিক্ষক সংগঠন এটার বাইরে । শাসকদলের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য তাঁদের অন-ডিউটিও দেওয়া হয়েছে ।"
একই বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর ৷ তিনি বলেন, "আলাদা করে কোনও সংগঠনকে তো আমন্ত্রণ করে না এই সরকার । সরকারি স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের ডেকেছে । ওরা সরকারপন্থী দুই-একটা হাতা-চামচ ছাড়া কাউকে ডাকে না । শিক্ষক দিবসে ওরা-আমরা নয়, পুরোটাই ওরা । এই সরকার কাউকে সম্মান দেয় বলে আমার মনে হয় না । যে শিক্ষকদের লাঠিপেটা করেছে কয়েকদিন আগে, অনশন করে দাবি আদায় করতে হচ্ছে, তাঁরা আবার শিক্ষক দিবস করার ঔদ্ধত্য দেখায় কী করে?"
তাঁদের কাছেও কোনও আমন্ত্রণ আসেনি বলে জানান পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সংঘের সহ-সাধারণ সম্পাদক চিরঞ্জীব গোস্বামী, মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্রদের ৷
শুধু কি তাহলে শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনকেই শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে? ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (WBTSTA) তরফে কৌশিক মুখোপাধ্যায় এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, " একদম নয় । জেলা পরিদর্শকের মাধ্যমে সব স্কুলে আমন্ত্রণপত্র যায় । কলকাতার আশপাশের জেলাগুলিকে নেওয়া হয়েছে জেলা পরিদর্শকের মাধ্যমে । বিভিন্ন স্কুলকে শিক্ষকদের নাম দিতে বলা হয়েছে । প্রত্যেকটা জেলার আবার সংখ্যা আছে । যে সব স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা বেশি সেই স্কুল থেকেই সাধারণত আমন্ত্রণ করা হয় । কারণ, আজ তো স্কুল ছুটি নয় ।"
কৌশিক মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, "এটা র্যান্ডামলি সিলেক্ট করা হয় । যে সব স্কুল সরকারের প্রোগ্রামগুলোতে ঠিক ঠিক অংশগ্রহণ করে, যায় আসে, তাদেরকেই জেলা পরিদর্শকরা ডেকে নেন । সারা বছরের একটা হিসেব আছে ।"