কলকাতা, 21 জানুয়ারি: বুলবুলের ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়নি কেন্দ্র । এমন অভিযোগ বহুবার করেছে রাজ্য সরকার । মুখ্যমন্ত্রীও বিভিন্ন সময় এনেছেন সেই অভিযোগ । এমনকী, প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে রাজভবনে গিয়েও রাজ্যের বকেয়া টাকার বিষয়ে দাবি জানিয়ে আসেন । কিন্তু, তারপরেও কোনও টাকা আসেনি বলেই নবান্ন সূত্রে খবর । তার জেরে বুলবুলে ক্ষতির পরিমাণ রাজ্য বাজেটের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে জোরদার চিন্তাভাবনা চলছে । এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর মধ্যে । এখন আমলা পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর ।
গত নভেম্বরে বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল । 9 সদস্যের সেই দলে ছিলেন শক্তিমন্ত্রকের ডেপুটি ডিরেক্টর ওপি সুমন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব কেবি সিং, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় বরাদ্দ দপ্তরের সুমিত আগরওয়াল, কৃষি ও কৃষক সহায়তা অধিকর্তা নরেন্দ্র কুমার । সে সময় নবান্নে তথ্য জানানো হয়, বুলবুলের জেরে 35 লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত । 5 লাখ 17 হাজার 535টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । 14 লাখ 89 হাজার 924 হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে । বিদ্যুৎ সংক্রান্ত ক্ষতি 597 কোটি । কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের হাতে মোট 23 হাজার 811 কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে দেওয়া হয় । তার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন, বুলবুলের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিতে সব রকমের সাহায্য করা হবে । কিন্তু নবান্নের দাবি, সেটা কথার কথা হয়েই রয়ে গিয়েছে । মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের দাবি, আজ অবধি কোনও ক্ষতিপূরণ আসেনি ।
রাজ্য সরকার বুলবুলের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত 600 কোটি টাকা খরচ করেছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর । পাশাপাশি কৃষি বিপণন দপ্তরের তরফে শস্য বীমার টাকা যাতে দ্রুত চাষিরা পান, সে বিষয়ে নজর দেওয়া হয় । বাড়িয়ে দেওয়া হয় কৃষি ঋণের পরিমাণ । তবে বাজেটে বহির্ভূত এই খাতে এই 600 কোটির বেশি খরচ করা সম্ভব নয় বলে অর্থ দপ্তর সূত্রে খবর । তাই এবার সেটিকে বাজেটে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে । বুলবুলে ক্ষতির বিষয়টি বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরেই বাকি কাজ করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর । রাজ্যে বাজেটে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি বিষয়গুলিতে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে ।