কলকাতা, 28 নভেম্বর: কারাবাস থেকে এখনই নিস্তার পাচ্ছেন না রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ৷ সোমবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Teacher Recruitment Scam) সংক্রান্ত একটি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ সাত অভিযুক্তকে ফের একবার জেল হেফাজতে (Jail Custody) পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত ৷ এদিন আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত (Special CBI Court) এই নির্দেশ দিয়েছে ৷ আগামী 12 ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট সাতজনকেই ৷
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা-সহ সংশ্লিষ্ট সাত অভিযুক্তই এদিন ফের একবার জামিনের আবেদন করেন ৷ কিন্তু সিবিআইয়ের আইনজীবী তাঁদের সকলেরই জামিনের বিরোধিতা করেন ৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ-সহ সংশ্লিষ্ট সকলকেই অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রী হিসাবে দাবি করা হয় ৷
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতবে তৃণমূল, আলিপুর আদালতে বললেন পার্থ
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী সেলিম রহমান বলেন, "আমার মক্কেলের নাম নিয়োগ দুর্নীতি মামলার প্রাথমিক এফআইআরে নেই ৷ তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক ৷" এরই পাশাপাশি পার্থর আইনজীবী আদালতের কাছে জানতে চান, তদন্তের নামে আর কতদিন এভাবে বন্দি থাকতে হবে পার্থকে ? সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়ার কোনও অগ্রগতি নেই বলেও অভিযোগ করেন পার্থর আইনজীবী ৷
অন্যদিকে, এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিনহার আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত আদালতে দাবি করেন, "চার্জশিট দেওয়ার পরও তদন্তকারীরা এখনও তদন্ত প্রক্রিয়ার প্রাথমিকস্তরেই রয়ে গিয়েছেন ৷ এখানে বৃহৎ ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে ৷ আরও অনেকে এই মামলায় যুক্ত আছেন বলেও দাবি করা হচ্ছে ৷ তাহলে কি যতদিন পর্যন্ত বাকি অভিযুক্তদের চিহ্নিত না করা হচ্ছে, ততদিন এই অভিযুক্তরা জেলে থাকবেন ?"
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবীও তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন ৷ কল্যাণময়ের যুক্তি, তাঁর নাম কেবল এফআইআরের একটি জায়গায় রয়েছে ৷ তাই তাঁর বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার কথা ভেবে অন্তত তাঁকে জামিন দেওয়া হোক ৷ এমনকী, কল্যাণময় যেকোনও শর্তেই জামিন পেতে রাজি বলে আদালতকে জানান তাঁর আইনজীবী ৷
উলটো দিকে, এদিন সংশ্লিষ্ট সাত অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই ফের একবার তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ করে সিবিআই ৷ তাদের আইনজীবীরা বলেন, এঁদের মধ্য়ে একজনকেও যদি জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করার এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা হতে পারে ৷ সব পক্ষের বক্তব্য় শোনার পর বিচারক সাতজনেরই জামিনের আবেদন নাকচ করে প্রত্যেকে ফের একবার জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ৷