কলকাতা , 21 ডিসেম্বর : সুজাতা-কে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিস পাঠাচ্ছেন সৌমিত্র খাঁ । আজই তৃণমূলে যোগ দেন সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী সুজাতা খাঁ । এরপরেই সাংবাদিক বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন সৌমিত্র খাঁ ।
স্ত্রীর প্রতি তাঁর গলায় কোনও ক্ষোভ ছিল না । স্ত্রীর কথা বলতে গিয়ে বারবার গলা কাঁপছিল তাঁর । কিন্তু, তারপরেও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হল তাঁকে । জানিয়ে দিলেন , রাজনীতি থাকবে রাজনীতির জায়গায় । সুজাতা খাঁ-কে উদ্দেশ্য করে বললেন , "সুজাতা দেশের জন্য তোমাকে ত্যাগ করলাম । তোমাকে খাঁ পদবি থেকে মুক্তি দিলাম । এখন থেকে আর খাঁ পদবি লিখ না । মণ্ডল লিখ । " চোখে তখন জল সৌমিত্র-র ।
স্ত্রী হিসাবে বরাবর পাশে পেয়েছেন সুজাতা-কে । তাঁর জয়ের পিছনে সুজাতারও অনেক অবদান আছে । খারাপ সময়ে সুজাতার পাশে থাকার দিনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন , "তুমি তোমার স্বামীর জন্য করেছ । খারাপ সময়ে আমার পাশে ছিলে । একটা সময়ে আমি গৃহবন্দী ছিলাম । সেইসময় তুমি আমার জন্য বাইরে লড়েছ । তুমি ছিলে বলেই কিছুটা হলেও আমি জিততে পেরেছি । লোকসভা ভোটের সময় বিষ্ণুপুরে তো ও বিজেপির জন্য লড়েনি, নিজের স্বামীর জন্য লড়েছিল । "
কিন্তু পরিবারের থেকেও দল বড় । কারণ, দলের জন্যই আজ এই জায়গায় পৌঁছেছেন তিনি । এটা আজ বারবার বুঝিয়ে দিলেন সৌমিত্র । বলেন , " বিজেপি অনেক বড় জায়গা করে দিয়েছে । বিজেপি না থাকলে আমি 1 লাখ ভোট পেতাম না । অনেকে আমাকে সমর্থন করেছেন । দলের জন্য আমি এই জায়গায় পৌঁছেছি । আমার লড়াই তোমার বিরুদ্ধে নয় ,তৃণমূলের বিরুদ্ধে । "
আরও পড়ুন , "বিজেপি তৃণমূলের বি টিম", তৃণমূলে যোগ দিয়ে বললেন সুজাতা
আজ তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে সৌগত রায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী । সেইসঙ্গে আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা শোনা যায় সুজাতার গলায় । অভিষেককে প্রিয় দাদা বলে সম্বোধন করেন তিনি । এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সৌমিত্র খাঁ স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বললেন , "একসময় এই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তোমার বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল । সেইসব কথা ভুলে গেলে ! সুজাতা তুমি ভুল করলে । " সেইসঙ্গে তিনি জানান , সুজাতার চাকরি খেয়ে নেয় তৃণমূল । তবু স্ত্রীকে তিনি কিছু বুঝতে দেননি । আর এখন ঘরের লক্ষ্মী তৃণমূল চুরি করে নিয়ে গেল ।
স্ত্রীর প্রতি তাঁর উদ্বেগের বিষয়টিও ধরা পড়ে সৌমিত্র গলায় । বিশেষ করে সুজাতাকে যাতে যথাযথ সুরক্ষা দেওয়া হয়, সেটা তৃণমূলকে একবার মনে করিয়ে দেন । বলেন , "দয়া করে সুজাতাকে খুন করে দেবেন না । " চোখে জল নিয়ে ভেজা গলায় সুজাতা-কে তাঁর সম্বোধন- "ভালো থেকো সুজাতা । "