কলকাতা, 19 নভেম্বর: 'যৌনকর্মী' শব্দ বদলের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ তবে এর বিরোধিতা করল সোনাগাছি । এই নিয়ে দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির তরফে আপত্তি তোলা হয়েছে ।
এই সংগঠনের অধীনে কলকাতা-সহ রাজ্যের 56টি যৌনপল্লি রয়েছে । ফলে সার্বিক ভাবে বাংলার যৌনকর্মীরা নিজেদের 'যৌনকর্মী' হিসেবেই পরিচিতি দিতে চান বলে স্পষ্ট করেছেন দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির সম্পাদিকা বিশাখা লস্কর ।
তাঁদের যুক্তি, "এখন কেউ জোরপূর্বক এই কাজ করেন না । বরং, নিজের ইচ্ছায় এই কাজ করছেন । ফলে, যাঁরা বলছেন জোরপূর্বক এই কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, তাঁরা সম্পূর্ণ ভুল । না হলে কেউ প্রকাশ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে খদ্দের ধরতেন না ।"
লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে আইনি ভাষ্যে পরিমার্জিত বই প্রকাশ করে দেশের শীর্ষ আদালত । সেখানে একাধিক শব্দের বদল ঘটলেও 'যৌনকর্মী' শব্দের বদল ঘটেনি । গত 28 অগস্ট দেশের প্রধান প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি লিখে 'যৌনকর্মী' শব্দের ঢালাও ব্যবহার বন্ধের আরজি জানায় অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ফোরাম । এই ফোরামের অধীনে গোয়া, মণিপুর, মহারাষ্ট্র, অসম ও দিল্লির একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে । তাদের যুক্তি, 'যৌনকর্মী' বলা মানেই মহিলারা স্বেচ্ছায় কাজ করছেন । কিন্তু বাস্তবটা উলটো । তাই তাঁরা যৌনকর্মীর পরিবর্তে 'পাচার-পীড়িতা', 'বাণিজ্যিক কর্মে নিযুক্ত মহিলা', 'বলপূর্বক বাণিজ্যিক যৌন শোষণের ফাঁদে পড়া মহিলা' - এই তিনটি শব্দ বন্ধ ব্যবহারের আর্জি জানিয়েছেন । তাঁদের আর্জিকে মান্যতা দিয়ে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে শীর্ষ আদালত ৷ যার তীব্র বিরোধিতা করছেন এ রাজ্যের যৌনকর্মীরা ।
তাঁরা বলছেন, "এখন নিজের ইচ্ছেতেই এই পেশায় আসছেন মহিলারা । জোর করে বা ভয় দেখিয়ে কেউ এই পেশায় আসছেন না । বলপূর্বক কেউ এই পেশায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে যান না । প্রকাশ্যে খরিদ্দার ধরেন না । তাই যে বা যাঁরা যৌনকর্মী শব্দ বদলের আবেদন করছেন, তাঁরা ঠিক করছেন না । বরং যৌনকর্মী হিসেবেই এই পেশার সঙ্গে যুক্ত মহিলারা নিজেদের পরিচয় চাইছে ।"
দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির সম্পাদিকা বিশাখা লস্কর বলেন, "বহু লড়াই আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের পরিচয় বা পেশার অধিকার আদায়ের চেষ্টা চলছে । নিজেদের যৌনকর্মী হিসেবেই আমরা পরিচিতি চাইছি । এই শব্দের বদল আমরা মানছি না, মানব না । প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলন সংঘটিত করব ।"
আরও পড়ুন: