কলকাতা, 29 অক্টোবর : দুর্গাপুজোয় আদালতের নির্দেশ অবমাননা করায় কলকাতার একাধিক ক্লাবকে আইনি চিঠি পাঠালেন মামলাকারী অজয় কুমার দে'র আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কলকাতার শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব , সুরুচি সংঘ , নিউ আলিপুর, ভবানীপুর , টালিগঞ্জ উইমেন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন মণ্ডপের ভিতর দর্শক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে । কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ সত্ত্বেও সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের মণ্ডপের ভিতরে ঘুরতে দেখা গেছে । পাশাপাশি বহু পুজো মণ্ডপ উদ্যোক্তাদের নামের তালিকা না টাঙিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো লোকজনকে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিল । রাজ্যের কয়েকজন মন্ত্রী আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে । বিশেষ করে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে অবাধে দর্শকদের ঢোকানো হয়েছে ।কোথাও কোথাও মণ্ডপে অঞ্জলিরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল । সেখানে আগে থেকে কোনও তালিকা প্রকাশ করা হয়নি । এ ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের DG-র কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে।
24 অক্টোবর অষ্টমীর দিন সুরুচি সংঘের পুজোয় অঞ্জলি দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি, তাঁঁর স্ত্রী রাফায়েত রশিদ মিথিলা, তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী নুসরত জাহান ও তাঁঁর স্বামী নিখিল জৈন এবং তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্রকে আইনি নোটিস পাঠানো হবে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবী। সেইমতো আজ সুরুচি সংঘ ছাড়াও কলকাতার একাধিক ক্লাবকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
19 অক্টোবর একটি জনস্বার্থ মামলার রায়ে রাজ্যের সমস্ত পুজো মণ্ডপে নো-এন্ট্রি ঘোষণা করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ তাদের নির্দেশে আরও জানায়, ছোটো পুজো মণ্ডপের পাঁচ মিটার পর্যন্ত এবং বড় পুজো মণ্ডপের 10 মিটার পর্যন্ত ব্যারিকেড করা থাকবে। পুজো মণ্ডপের মধ্যে উদ্যোক্তারা প্রতিদিন সর্বোচ্চ 25 জন প্রবেশ করতে পারবেন । তাঁঁদের নাম পুজো মণ্ডপের সামনে আগে থেকে টাঙিয়ে দিতে হবে। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানায় একাধিক ক্লাব। তাই 21 অক্টোবর ডিভিশন বেঞ্চ তাদের রায় সামান্য সংশোধন করে জানায়, বড় পুজো মণ্ডপগুলির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 60 জন এবং ছোট পুজো মণ্ডপের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 20 জন পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারবেন। তবে তাদের নামের তালিকা সকাল আটটার মধ্যে প্যান্ডেলের সামনে দিতে হবে । এছাড়া নো এন্ট্রি জো়নে শুধুমাত্র কয়েকজন ঢাকি ঢাক বাজাতে পারবেন। পাশাপাশি এবছর কোনওরকম অঞ্জলি বা সিঁদুর খেলা যাবে না। এই সমস্ত নির্দেশ বহু জায়গাতেই মানা হয়নি বলে ওই চিঠিতে মামলাকারী দাবি করেছেন।