কলকাতা, 29 ডিসেম্বর: রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে আয়োজিত গান মেলার পালটা বঙ্গ সঙ্গীত উৎসব ৷ আয়োজনে 'কালচার্যাল অ্যান্ড লিটারারি ফোরাম অব বেঙ্গল' ৷ যার সভাপতি হলেন আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি । সহযোগিতায় রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আগামী 20 জানুয়ারি কলকাতার প্রিন্সেপঘাটে হবে এই সঙ্গীত উৎসব । বলা হচ্ছে যে, রাজ্য সরকার প্রতি বছর এই সময় যে গান মেলার আয়োজন করে, সেখানে বাদ পড়ে যান অনেক প্রতিভাবান শিল্পী । সেইসব বঞ্চিত এবং প্রকৃত প্রতিভাবান সঙ্গীতশিল্পীদের মঞ্চ করে দিতে চায় 'কালচার্যাল অ্যান্ড লিটারারি ফোরাম অব বেঙ্গল'।
এই সঙ্গীত উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সঙ্গীতশিল্পী ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়কে । প্রসঙ্গত, 2020 সালে বিজেপির কালচারাল সেলের সঙ্গে যুক্ত হন এই সঙ্গীতশিল্পী । তবে তারপর 2022 সালে দল ছেড়ে দেন তিনি । তখন তিনি বলেছিলেন যে, বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে বিজেপির কোনও মিল নেই । আর সেই ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়কেই এ বার বঙ্গ সঙ্গীত উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হল । এই বিষয়ে ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "এটা বিজেপির অনুষ্ঠান নয় । আমি একজন সঙ্গীতশিল্পী । তাই সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে যাঁরা আমাকে সম্মান দিয়ে আমন্ত্রণ জানাবেন সেখানেই যাব ।"
এ দিন রাজ্যের শাসকদলকেও একহাত নিয়েছেন ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "বর্তমান শাসক দল একটা পাড়ার ক্লাবে পরিণত হয়েছে । যাঁদের বাথরুম সিঙ্গার হওয়ারও যোগ্যতা নেই তাঁরা ডাক পান । রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর এবং শব্দ ভুল গাইছেন । তাই আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের মতো সঙ্গীতশিল্পীদের এগিয়ে আসতে হবে । এ বারের সরকারি অনুষ্ঠানে ছোট-বড় শিল্পী মিলিয়ে 1200 জন শিল্পী বাদ পড়েছেন । তাহলে কারা ডাক পেলেন, কারা ডাক পেলেন না, কেনই বা পেলেন না, সেগুলো কীভাবে মুখ্যমন্ত্রীর চোখ এড়িয়ে যেতে পারে ?"
এই বিষয়ে ফোরামের সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান যে, ফোরামের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানটি করা হচ্ছে । তবে এই উৎসব আয়োজনে সহায়তা করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির নেতা কর্মীদের সমর্থন রয়েছে । এটি আপাদমস্তক একটি সাংস্কৃতিক এবং অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান ।
জিতেন্দ্রর কথায়, "রাজ্য সরকারের গান মেলায় প্রকৃত শিল্পীদের বঞ্চিত করে স্বজনপোষণ হয় । এই বছর বহু খ্যাতনামা শিল্পীদের সরকারি মেলায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে ফোরামের কাছে একাধিক অভিযোগ এসেছে । শুধুমাত্র যে সব শিল্পী শাসক দলের তাঁবেদারী করতে পারবেন তাঁরা ওখানে সুযোগ পান । কিন্তু অনেক শিল্পী আছেন, যাঁরা কোনও দল করেন না, শুধু সঙ্গীত সাধনাই করেন । তাই সেইসব শিল্পীকে এই উৎসবের মাধ্যমে একটা সুযোগ করে দেওয়া হবে ।"
তিনি আরও জানান যে, এই বছর থেকে শুরু হলেও প্রতি বছর এই সঙ্গীত উৎসব করা হবে, যতদিন না পর্যন্ত এই বঞ্চনা বন্ধ হবে । যদিও এই উৎসবের আয়োজক জিতেন্দ্র তিওয়ারি এটিকে রাজনৈতিক তকমা দিতে নারাজ ।
প্রসঙ্গত, আগামী 20 জানুয়ারি বেলা 1টা থেকে শুরু হবে উৎসব ৷ চলবে রাত 9টা পর্যন্ত ।
আরও পড়ুন:
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বন্ধ মেলা চালু করতে এসে গোষ্ঠী কোন্দলে বিপাকে মন্ত্রী অরূপ !
লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ গঙ্গাসাগর মেলা, প্রস্তুতিতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ মমতার